ডেস্ক রিপোর্ট: একবার ভাবুন তো ফেনী, কুমিল্লা কিংবা খাগড়াছড়ির মানুষ জনের এমন খুশির সংবাদ শুনে কেমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে? এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ভয়াবহ বন্যায় তাদের জীবন ওষ্ঠাগত। জীবনযুদ্ধে লড়াই করে কোনোমতে টিকে থাকতে হচ্ছে। সেখানে পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবারের মতো তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট জয় কেমন আর প্রভাব ফেলবে! হয়তো জীবন- মরণ সমস্যার সামনে খেলা কিংবা অন্য কিছু সেভাবে প্রভাবক হয়ে কাজ করার কথা নয়।
তবে রাওয়ালপিন্ডির এমন স্মরণীয় জয় যে বানভাসি অঞ্চলের মানুষের মাঝে একটু হলেও সুখানুভূতি দিয়েছে, দিয়েছে আনন্দের দোলা। বেঁচে থাকা কিংবা লড়াইয়ে অন্যতম অনুপ্রেরণা, তা অকপটে বলে দেওয়া যায়। কেননা সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমদের পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন জয় যে প্রথমবার এলো।
সরকার পরিবর্তনের পর চারদিকে নতুন করে গোছানোর পরিকল্পনা, পাশাপাশি বাস্তবায়নের চেষ্টা। ঠিক এমন সময়ে ভয়াবহ বন্যায় পুরো দেশ যেন এক বিন্দুতে এসে পৌঁছেছে। ভেদাভেদের কোনও চিহ্ন নেই। সবাই যখন লড়ছে, ঠিক সেসময় রাওয়ালপিন্ডির ঐতিহাসিক জয়টি যেন টনিক হয়ে এসেছে। মুশফিক-সাকিবদের কল্যাণে এমন দাপুটে জয় ক্রিকেট বিশ্বকেও করেছে অবাক।
এই জয়ের মাহাত্ম্যই অন্যরকম। টেস্টের আগে বাংলাদেশ নিয়ে কেউ কেউ তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিল। মুশফিকের অনবদ্য ১৭১ রানে পাহাড়সম সংগ্রহ আর অন্যদের দাপটে পঞ্চম দিনে এসে জয়ের ভেলায় নোঙর করে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মতো শক্তিধর দেশকে ১০ উইকেটে হারের লজ্জা দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। তাও তাদের মাঠে! মুলতানে হয়নি। অনেক দিন পর হলেও ইতিহাস হয়েছে রাওয়ালপিন্ডিতে।
দেশের বন্যার কারণে যারা রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু থেকে চোখ রাখতে পারেননি, তাদের জন্য আজকের ফল সত্যি আশাজাগানিয়া। মুশফিকরা সেখানে মাঠে লড়াই করলেও তাদের অন্য চোখ ছিল বন্যাদুর্গত এলাকার দিকে। তাই তো ম্যাচ সেরার অর্থ তখনই দুর্গত অঞ্চলের মানুষের জন্য দিতে কার্পণ্য হয়নি। লিটন দাসও একই কাজ করে দারুণ সহমর্মিতা জানিয়েছেন।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।