অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত দিনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই সাধারণত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তবে ভোট গ্রহণের সময় এবং ভোট গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংসতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর তাই বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তারা ভোটারদের বলছে, এই নির্বাচনের ফলাফল ট্রাম্পের অনুকূলে না এলে তারা ভোটের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করবে। এমনকি তারা ভোটারদেরও এটি প্রতিহত করতে আহ্বান জানিয়েছে। এতে ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা বাড়ছে।
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যের শহর ও গ্রামের ভোট কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভোটকেন্দ্রকে কংক্রিটের ব্লক, কাঁটাতারে বেড়া ও শক্ত দরজা স্থাপন করা হয়েছে। কিছু নির্বাচনী বুথে, বিশেষ করে সাতটি সুইং স্টেটে পোল বুথকে বুলেটপ্রুফ কাচ দিয়ে মোড়া হয়েছে, প্যানিক বাটন ও ভিডিও নজরদারি ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে।
সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের রাতে নিরাপত্তা বজায় রাখতে কর্মকর্তারা স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। এরই মধ্যে ওয়াশিংটন স্টেট, ওরেগন ও নেভাদায় ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর আগে, ওরেগন ও ওয়াশিংটনে কয়েকটি ব্যালট বাক্সে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কয়েক শ ব্যালট পুড়ে গেছে।
কলোরাডোর গভর্নর জ্যারেড পোলিস ন্যাশনাল গার্ডের সাইবার টিমগুলোকে সক্রিয় করেছেন। কানেকটিকাটের সাইবার ইউনিটও স্থানীয় সাইবার নিরাপত্তার পরীক্ষা করছে। আইওয়াতে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা নির্বাচন সুরক্ষায় সাহায্য করছে। তারা ২৪ ঘণ্টা হুমকি পর্যবেক্ষণ করছে।
অ্যারিজোনার সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যাড্রিয়ান ফন্টেস বলেছেন, তিনি নিয়মিত বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরেন। কারণ, কিছু সমালোচক তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। নিউ মেক্সিকোর স্যান্ডোভাল কাউন্টিতে, আলবুকার্কের উত্তর অংশে, সোয়াত টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত বছর নিউ মেক্সিকোর রিপাবলিকান প্রার্থী সলোমন পেনিয়া ডেমোক্র্যাট কর্মকর্তাদের বাড়ির দিকে গুলি করার অভিযোগে ফেডারেল মামলার সম্মুখীন হন।
ডেট্রয়টে কর্মকর্তারা একটি কেন্দ্রীয় ভোটকেন্দ্র স্থাপন করেছেন এবং নিরাপত্তা বাড়িয়েছেন। ২০২০ সালে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলার পুনরাবৃত্তি এড়াতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেবার ট্রাম্প সমর্থকেরা ভোটকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল এবং ‘গণনা বন্ধ করো’ বলে চিৎকার করছিল।
ওয়াশিংটন ডিসিতে নিরাপত্তার কারণে হোয়াইট হাউস, ইউএস ক্যাপিটল এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বাসভবন নেভাল অবজারভেটরির চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়েছে। হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির আশপাশের রাস্তা বন্ধ থাকবে।
সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে, ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে স্বীকৃতির আগে ক্যাপিটলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ফিলাডেলফিয়ার জেলা অ্যাটর্নি লরেন্স এস. ক্রাসনার সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, ‘যে বা যারা সশস্ত্র খেলা খেলতে চাইছে, তাদের ফল ভোগ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা মানুষকে অসম্মান করছে বা হুমকি দিচ্ছে, তাদেরও কঠোর ফল ভোগ করতে হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ফিলাডেলফিয়ায় তাদের কাছে যথেষ্ট হাতকড়া, জেল ও কারাগার আছে। যারা ভোটারদের ভয় দেখাতে বা ভোট মুছে ফেলতে চাইবে, তাদের সেখানে পাঠানো হবে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।