বিকল্প পেশার কথা ভাবছেন তাঁরা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৩:০০, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

বিকল্প পেশার কথা ভাবছেন তাঁরা

editorbd
প্রকাশিত নভেম্বর ৯, ২০২৪
বিকল্প পেশার কথা ভাবছেন তাঁরা

বিনোদন ডেস্ক:

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর সব ক্ষেত্রেই লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। তবে স্থবির হয়ে আছে দেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি। সিনেমায় অর্থ লগ্নি করার সাহস পাচ্ছেন না প্রযোজকেরা। শুটিং না থাকায় বেকার সময় কাটাচ্ছেন অভিনয়শিল্পীরা, অনেকে পড়েছেন অর্থনৈতিক সংকটে। সংকট কাটিয়ে উঠতে অনেক শিল্পীই বিকল্প পেশার কথা ভাবছেন।

গত জুলাইয়ের আগেও সিনেমার ব্যস্ত অভিনেতাদের একজন ছিলেন জিয়াউল রোশান। কাজ শেষ করেছেন ‘জামদানি’, ‘প্রেমপুরাণ’, ‘পুলসিরাত’ ও ‘এক্সকিউজ মি’ সিনেমার। হাতে ছিল ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’ ও ‘অপারেশন জ্যাকপট’সহ কয়েকটি সিনেমা। কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর শুটিং ছাড়াই কাটছে রোশানের সময়। এ কারণে অভিনয়ের পাশাপাশি নতুন আয়ের উৎস খুঁজছেন এই অভিনেতা।

অনেকটা অভিমান নিয়ে রোশান বলেন, ‘কোনো কিছু হলেই মিডিয়ার ওপর প্রভাব পড়ে। করোনার সময়েও প্রায় দুই বছর কাজ ছিল না। এবারও সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যারা অভিনয়কে একমাত্র পেশা হিসেবে নিয়েছি, তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছি। বাস্তবতা অনুযায়ী সিনেমাকে একমাত্র পেশা হিসেবে নেওয়ার পরিস্থিতি এখন আমাদের দেশে নেই। সত্যি বলতে সিনেমা নিয়ে কেউ ভাবছে না। শুধু আমি নই, সিনেমার সবাই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। তাই ভিন্ন কিছু করার কথা ভাবছি। ইচ্ছা আছে কোনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার।’

গত মাসে ফেসবুক লাইভে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছিলেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। সাইমন বলেন, ‘পরিচালকের মাধ্যমে আমরা শিল্পীরা কাজ করি। বর্তমান সময়ে সেই পরিচালকেরাই ক্রাইসিসে আছেন। তাঁরা সিনেমা পরিচালনা ছাড়া অন্য কিছুতে সম্পৃক্ত না। এখন সিনেমা না হওয়ায় তাঁরা বেকার হয়ে পড়েছেন। আর কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে?

অসংখ্য শিল্পীর পরিবার চলে সিনেমার আয়ের মাধ্যমে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমিসহ অনেক শিল্পীর অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না।’ —সাইমন সাদিক
পরিচালকদের মতো শিল্পীরাও অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত না। আমিও অন্য পেশায় জড়িত নই। কিছুদিন আগে থেকে চেষ্টা করছিলাম অন্য কিছুতে জড়িত হওয়ার। তবে এখনো পেরে উঠিনি। আমার মূল পেশা চলচ্চিত্র। আমিসহ অসংখ্য শিল্পীর পরিবার চলে সিনেমার আয়ের মাধ্যমে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমিসহ অনেক শিল্পীর অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না।’

সাইমন সাদিক মনে করেন, নিয়মিত কাজ হলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। অভিনেতা জানান, অবস্থার পরিবর্তন করতে গেলে কাজের বিকল্প নেই। শিগগিরই কাজে ফেরার অপেক্ষায় আছেন তিনি।

আরেক নায়ক বাপ্পি চৌধুরীও দীর্ঘদিন ধরে দিতে পারছেন না নতুন সিনেমার খবর। শোনা যাচ্ছে, পারিবারিক ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছেন এই অভিনেতা। সম্প্রতি ফেসবুকে স্পিনিং ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের কয়েকটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। কয়েক বছর আগেই বাপ্পি জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিবার চাইছে অভিনয়ের তুলনায় ব্যবসায় বেশি মনোযোগ দিতে। হাতে নতুন কাজ না থাকলেও বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে বাপ্পির।

সিনেমাকে একমাত্র পেশা হিসেবে নেওয়ার পরিস্থিতি এখন আমাদের দেশে নেই। শুধু আমি নই, সিনেমার সবাই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। তাই ভিন্ন কিছু করার কথা ভাবছি। ইচ্ছা আছে কোনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার। —জিয়াউল রোশান
নতুন সিনেমা না থাকায় শুধু পর্দার মানুষেরা নয়, নেপথ্যের কলাকুশলীরাও পার করছেন কষ্টের জীবন। জীবিকার তাগিদে অনেকেই করেছেন পেশা বদল। অনেকে অপেক্ষায় আছেন সুদিন ফেরার।

অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে আটকে গেছে বেশ কিছু সিনেমার মুক্তি। নতুন সিনেমার অভাবে ধুঁকছে হলগুলো। দ্রুত সংকট কাটিয়ে না উঠতে পারলে হলের সংখ্যা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন হলমালিকেরা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।