
বুলবুল আহমদ, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র্যাব। মাদকের গোলক ধাঁধায় পড়ে আমাদের যুবসমাজ দিশেহারা ও বিভ্রান্ত। যুবসমাজের মধ্যে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, মাস্তানী ইত্যাদির অনুপ্রবেশ ঘটে যুবসমাজকে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে নানা অনাচারের সঙ্গে মাদকাশক্তি ও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই মাদকের প্রভাব বিস্তার করছে এখন নবীগঞ্জ উপজেলার প্রানকেন্দ্র আউশকান্দি এলাকায়। মাদকের বয়াল ছোবলে এলাকার যুবসমাজ ধ্বংসের পথে! আউশকান্দি এলাকায় বিভিন্ন অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এমনকি শিশুদের দিয়েও করানো হচ্ছে অপর্কম। এমন কর্মকান্ডে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত পায় না। স্থানীয়রা জানান, গত ৩/৪দিন শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে মিঠাপুর বটতলায় সন্ধ্যা রাতে মান্ডপের পাশে শরিফ নামে এক শিশুকে ইয়াবা বিক্রিকালে জনতা আটক করে উত্তম মধ্যম দিলে ওই শিশু শরিফ উত্তেজিত জনতাকে জানায়, গত কয়েক দিন ধরে দাউদপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার দেওয়া ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। সন্ধ্যায় কাসেম নামের আরেক যুবককে দিয়েও ইয়াবা বিক্রি করতো মন্নান। এরই মধ্যে কাসেমকে সন্দেহ করে স্থানীয় লোকজন আটক করলে সাথে সাথে এ ঘটনার খবর পেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী মন্নান ঘটনাস্থলে ছুটে এসে বলে, এইসব ইয়াবা আমার, কাসেম আমার লোক বলে জোরপূর্বক কাসেম কে চিনিয়ে নিয়ে যায়। এভাবে আটক মাদক বিক্রিতাকে লোক সম্মূখে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ায় উপস্থিত লোক জনের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর পর শিশু শরিফকে আউশকান্দি- হীরাগঞ্জ মধ্য বাজার মন্নানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যায়। এবং তার দেয়া ২৫টি ইয়ার টেবলেট ফেরত চায়। এতে শরিফ জানায় কাছে যে টেবলেটগুলো ছিল তা জনতা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এ কথা বলা মাত্রই শুরু হয় শিশু শরিফের উপর অমানুষিক নিযার্তন। বেধরক মারপিঠ করার কারণে তার সু-চিৎকারে আশপাশ বাজার এলাকার লোকজন ছুটে এসে তাকে রক্ষা করেন। পরে খবর পেয়ে শরিফের মা সুপালা বেগম উপস্থিত হয়ে কেন তার বাচ্ছাকে মারপিঠ করা হচ্ছে জানতে চাইলে তার উপরও চলে অমানুবিক নিযার্তন। মা- ছেলের চিৎকারে আবারো বাজার এলাকার লোকজন এসে তাদেরকে রক্ষা করেন। পরে খোয়া যাওয়া ২৫টি ইয়াবা টেবলেটের মূল্য ২৫শত টাকা দিয়ে ছেলে কাসেমকে নিয়ে যান। এ ঘটনায় স্থানীয় উত্তেজিত ছাত্র,জনতা ও ব্যবাসয়ীরা একা হয়ে মাদক ব্যবসায়ী মান্নানকে ধাওয়া করে সে আউশকান্দি- হীরাগঞ্জ বাজার মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের ছিছনের কলনীতে ডুকে পড়ে। পরে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা চতুর দিকে গ্রেরাও করে রেখে তাকে আটক করে উত্ততম মধ্যমে দিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্টানে নিয়ে আসেন। মন্নানের বিরোদ্ধে একাধীক চুরি, ডাকাতি ও মাদক চুরাকারবারী অপরাধ মুলক কর্ম কান্ডের অহরহ অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সে কয়েক বার র্যাব-পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে সে।
গতকাল রাতে ইয়াবা ব্যবসায়ী জনতার হাতে আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কর্যালয়ে আসেন শ্রীমঙ্গল র্যাব-৯ এর সদস্যরা। পওে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে আটক করে যান।
৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মন্নান মিয়া (৩৫)। মাঝে কিছু দিন সে খুব ভালই চলছিল এলাকার লোকজনের। কিন্তু আউশকান্দি হীরাগঞ্জ মধ্য বাজারে প্রথম সে একটি চায়ের দোকান খুলে, পরে বিরানী, তারপর ভূষিমাল আর এখন ইয়াবা ব্যবসা করে সে অপরাধ জগৎতে পা দিয়েছে। কিছু দিন ধরে আউশকান্দি এলাকায় ব্যাপক ভাবে চতুরদিকে ছড়িয়ে পড়েছে মাদক। আর এই মাদকের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা যুবসমাজ, স্কুল- কলেজ গামী শিক্ষার্থীরা। মাদকাশক্তির ফলে যুবসমাজ আজ লক্ষ্যহীন। যুব সমাজের বর্তমান যেমন বিশৃঙখলা পূর্ণ, ভবিষ্যৎও তেমনি আঁধারে ঢাকা।
এব্যাপারে মাদক বিক্রিকারী শরিফের মা সুপালা বেগমের সাথে আলাপ কালে সে জানায়, তার ছেলে শরিফকে দিয়ে মন্নান গত কয়েক দিন ধরে কি ধরনের বড়ি বিক্রি করিয়ে আসছে। তিনি আরো বলেন, তার ছেলেকে দিয়ে এসব কি বিক্রি করা হচ্ছে জানতে চাইলে মন্নান মিয়া বলে ওসব তুমি ছিনবানা! এ পর্যায়ে মন্নানের সাথে র্তক বির্তক হয়। পরে আমি আমার ছেলেকে ওই সব বিক্রি না করতে বললে মন্নান আমাকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভিতি দেখায়। আমি আর ভয়ে কিছু বলি নাই।
এ ব্যাপারে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মুহ্বিুর রহমান হারুন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইয়াব বিক্রির খবর পেয়ে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত জনতার সাথে আমিও ওই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে র্যাব- পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো বলেন, আমার ইউনিয়নের কোন মাদক বিক্রেতা, সন্ত্রাস, চুর- ডাকাতদের চিহিৃ করে আইনে আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে আউশকান্দি- হীরাগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মুশেদ আহমদ জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি, এ ব্যাপারে কি করা যায়, বাজার কমিটির সবাইকে নিয়ে আগামী বৈঠকে আলোচনা করবো। আউশকান্দি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার খালেদ আহমেদ জজ এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির সাথে আলাপ আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অচিরেই নিচ্ছি।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।