ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি তার দেশের বিষয়ে সৌদি যুবরাজের সাম্প্রতিক অবমাননাকর বক্তব্যের জবাবে বলেছেন, উদ্ভট কল্পনা-প্রবণ মোহাম্মাদ বিন সালমান মিথ্যা ও কটু কথা ছাড়া অন্য কোনো কথা বলেন না, তাই তার কথা কোনো জবাব পাওয়ারই মূল্য রাখে না।
রাজনীতি সম্পর্কে অনভিজ্ঞ বা আনাড়ি এই ব্যক্তির দূরদর্শিতা না থাকায় তার মুখ দিয়ে অসময়ে অযথাই কড়া কথা বের হয় বলে কাসেমি মন্তব্য করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার সিবিএস টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান ইরানকে ‘বিপজ্জনক’ বলে দাবি করে বলেছিলেন, ইরান পরমাণু বোমা বানালে সৌদি আরবও খুব শিগগিরই একই কাজ করবে!
জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) যখন বহু বছর ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বলে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে তখন সৌদি বাদশার ছেলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে ইসরায়েলি দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বললেন।
সৌদি যুবরাজ আরও বলেছিলেন, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাঁচটি সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম নয় এবং সৌদি আরবের অর্থনীতি ইরানের অর্থনীতির চেয়ে বড়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, সালমানের বক্তব্যে বিচক্ষণতা বা দূরদৃষ্টি থাকে না। বরং তার বক্তব্য উগ্র-গোত্রবাদে ভরপুর থাকে যা আইয়্যামে জাহিলিয়াত বা অজ্ঞতার যুগের বেদুইনদের (গোত্র-পূজার) কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, যে দেশ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিরস্ত্র ও অবরুদ্ধ ইয়েমেনি জনগণের প্রতিরোধের মুখে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে এবং যাদের প্রতিরোধ সৌদি কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে সেই দেশের উচিত নয় সশস্ত্র বাহিনী ও অর্থনীতির আকার নিয়ে কথা বলা। বড়দের মোকাবেলায় বিশেষ করে ইরানের মত শক্তিশালী দেশের মোকাবেলায় সৌদি শাসকগোষ্ঠীর সংযত হয়ে কথা বলা উচিত বলে কাসেমি মন্তব্য করেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেছেন, ইরান তার প্রতিবেশী সব দেশকেই সম্মান দেখিয়ে আসছে এবং ইরান এ অঞ্চলে কেবল কোনো একটি দেশ শক্তিশালী হোক তা চাওয়ার বদলে গোটা অঞ্চলকে শক্তিশালী ও নিরাপদ দেখতে চায়।