এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: রাজধানীতে আজ পর্দা উঠছে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৯’ এর। নয় দিনব্যাপী উৎসব চলবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। উৎসব আয়োজন করছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। গত সাতাশ বছর ধরে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে সংগঠনটি। এবারের উৎসবের শ্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’। উৎসবে দেখানোর জন্য ৭২টি দেশের ২১৮টি চলচ্চিত্র নির্বাচন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক। সভাপতিত্ব করবেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
এ উপলক্ষে গতকাল ঢাকা ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল, উৎসবের জুরি ইলিয়াস কাঞ্চন, উৎসব কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ম. হামিদ, উৎসব প্রোগ্রামার জোহরে জামালি ইয়াসিম গুজেলপিনার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, এই আন্তর্জাতিক উৎসবে সারাবিশ্বের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নতুন নতুন চলচ্চিত্র সিনেমাপ্রেমীদের উপহার দেওয়াই মূল লক্ষ্য। চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে এ উৎসব অনেক আনন্দের। আশা করছি, এবারও আমরা সফলভাবে এ উৎসব পরিচালনা করতে পারব।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমি দেশের বাইরে গেলে কখনোই ছবি না দেখে আসি না। সেখানকার হলগুলোর পরিবেশ খুবই ভালো। আমি সরকারের কাছে আশা করব, আমাদের দেশের হলগুলো যেন উন্নত করা হয়। সরকারি অনুদানেও অনেক ভালো গল্পের ছবি হওয়া দরকার। এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আমাদের জন্য ইতিবাচক।
ম. হামিদ বলেন, এই উৎসব বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ভালো মানে তুলে আনতে পথ দেখিয়ে আসছে। বরাবরের মত এবারও উৎসবে ভালোমানের ছবি দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকরা।
নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো কয়েকটি সেশনে প্রদর্শিত হবে। সেশনগুলো হচ্ছে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্টোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানোরমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, ইনডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্মস। নগরীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন ও প্রধান মিলনায়তন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেস মিলনায়তন এবং ব্লকবাস্টার সিনেমায় উৎসবের ছবিগুলো প্রদর্শিত হবে।
পাবলিক লাইব্রেরী ও জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে সকাল থেকে শিশুদের কয়েকটি ছবি প্রদর্শিত হবে। যা স্কুলের শিশুরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিনামূল্যে দেখার সুযোগ পাবে। পরে বিকালের প্রদর্শনীর জন্য টিকিটের দাম ৫০ টাকা।
উৎসব উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও ১১ ও ১২ জানুয়ারি রাজধানীর আলিয়ঁস ফ্রঁসেস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘উইমেন্স ফিল্ম মেকারস কনফারেন্স’। এতে আন্তর্জাতিক নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ব্যক্তিত্বরা অংশ নেবেন। ৬০টি দেশ থেকে উৎসবে যোগ দেবেন সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র সমালোচকরা। সারাবিশ্বেই নারীদের অবস্থান পরিবর্তন ঘটছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও নারীদের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটছে। এসব বিষয়ে তথ্যাবলি উৎসবে উপস্থাপিত হবে। এই উদ্দেশ্যে এবারের উৎসবে পঞ্চমবারের মতো নারী চলচ্চিত্র নির্মাতারা অংশ নিচ্ছেন।
এবারের উৎসবে যেসব দেশের ছবি দেখানো হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, ভুটান, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, কিউবা, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, প্যালেস্টাইন, জার্মানি, গ্রিস, হংকং, হাঙ্গেরি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইটালি, জাপান, কাজাকস্তান, কসোভো, কিরগিস্তান, লাটভিয়া, লেবানন, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নেপাল, নরওয়ে, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, সিরিয়া, তাইওয়ান, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, আরব-আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভেনিজুয়েলা এবং স্বাগতিক বাংলাদেশ।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।