‘অর্থ বরাদ্দে আমার ভূমিকা পোস্ট অফিসের মতো’
৩০ জানু ২০১৯, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট :: সিন্ডিকেট করে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসাশিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো.আবদুর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অপারেশন প্ল্যানের (ওপি) আওতায় সকল সরকারি মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে প্রতি বছর ১০০ থেকে ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। অর্থ বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে আমার ভূমিকা অনেকটা পোস্ট অফিসের মতো।’
তিনি জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে টাকা আসে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সেই টাকা তার কোডে আসে। পোস্ট অফিসে চিঠি এলে যেমন পোস্ট মাস্টার সংশ্লিষ্ট প্রাপকের ঠিকানায় পৌঁছে দেন, ঠিক তেমনি তিনি তার কোডে আসা টাকা বিভিন্ন কলেজের প্রিন্সিপালের চাহিদার ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।
যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র ক্রয়, প্রশিক্ষণ ও বিদ্যুৎসহ ২০/২৫টি খাতে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল পিপিআর অনুসরণ করে দায়িত্বপালন করে থাকেন। সেখানে কী হয় না হয় তা দেখা তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে তিনি কোনো প্রকার আর্থিক দুনীতির সঙ্গে মোটেই জড়িত নন বলে জানান।
আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনিসহ স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকসহ চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুদক। বুধবার তিনি দুদকে যেতে পারেন। দুদকে যাওয়ার প্রাক্কালে দুর্নীতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজের কাছে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন।
অধ্যাপক ডা. মো.আবদুর রশীদ বলেন, ‘দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে রাতদিন পরিশ্রম করে ঘুম হারাম করে মেডিকেল এডুকেশনকে শক্তভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে আবজালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সে অনেক বছর যাবত এখানে ছিল তবে গত দুই বছর যাবত সে এ শাখায় নেই। সে কীভাবে কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত থাকছে তা আমি জানি না।’
তিনি জানান, অসুস্থতার কারণে দুদক আগে ডাকলেও তিনি যেতে পারেননি। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক ১৫ দিন সময় দিয়েছে। তিনি বুধবার হয়তো যেতে পারেন বলে জানান। তবে তিনি এখনও দুদক থেকে হাজিরা দিতে হবে এমন চিঠি হাতে পাননি।
গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানান অধ্যাপক ডা. মো.আবদুর রশীদ। তিনি ছাড়া আরও যে তিন কর্মকর্তাকে দুদক তলব করেছে তারা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর ড. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন এবং সহকারী পরিচালক ডা. মো. আনিছুর রহমান।
চিঠিতে ওই চার কর্মকর্তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টের ফটোকপি, নিজ ও পরিবারের নামে অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণ ও আয়কর নথিসহ হাজির হতে অনুরোধ করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরে সিন্ডিকেট করে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে এই চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এই অনুসন্ধান করছে।