নিউইয়র্ক সংবাদদাতা :: নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট পদে কাউন্সিল মেম্বার জুমানী উইলিয়াম নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী জুমানী উইলিয়ামের প্রাপ্ত ভোট ১২৯,৫৫০। নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কাউন্সিলম্যান এরিক উলরিচ পেয়েছেন ৭৪,০৬১ ভোট, প্রাক্তন সিটি কাউন্সিলের স্পিকার মেলিসা মার্ক-ভিভারিটো ৪৩,১১৯ ভোট পেয়ে তৃতীয়, অ্যাডমিনম্যান মাইকেল ব্ল্যাক ৩২,০৭৫ ভোট পেয়ে ৪র্থ এবং সিটি কাউন্সিলর ইয়েদ্যানিস রদ্রিগেজ ২৩,৯৩৬ ভোট পেয়ে ৫ম হয়েছেন। আর অন্য কোন প্রার্থীর ২০,০০০ এর বেশি ভোট নেই। প্রাপ্ত ভোটের হিসেবে ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে হেলাল শেখ ১২তম হয়েছেন। হেলাল শেখের প্রাপ্ত ভোট ৪,২৪৩ ভোট। বোর্ড অব ইলেকশন দ্য সিটি অব নিউইয়র্ক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
হেলাল আবু শেখ তাকে সমর্থনের জন্য ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম’র মাধ্যমে বাংলাদেশী কমিউনিটি সহ সকল ভোটারকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এদিকে, বিশেষ এ নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ৩৯০,৮১৩। এর বিরীতে ২০১০ সালের নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন ১,০৯৭,৮৪৬ জন ভোটার।
নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট এর শূন্য পদে বিশেষ নির্বাচন গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্দলীয় এ নির্বাচনে পাবলিক এডভোকেট পদে বাংলাদেশী হেলাল শেখ সহ লড়েছেন ১৭ জন। নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট লেটিসা জেমস গত নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে নিউইয়ক স্টেট এটর্নী জেনারেল নির্বাচিত হওয়ায় এই শূন্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।
এ নির্বাচনে কৃষ্ণাঙ্গ প্রার্থীদের মধ্যে জুমানী উইলিয়াম, মাইকেল ব্ল্যাক ও এটর্নী ডন স্মল আলোচিত প্রার্থী ছিলেন। সবশেষে নিউ ইয়র্ক টাইমস এর সমর্থন নিয়ে এগিয়ে ছিলেন জুমানী। যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়ার ৮ দেশীয় প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগঠন অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসালও আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছিল জুমানীকে। মেয়র বিল ডি ব্লাসিও নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট নির্বাচিত হওয়ায় জুমানী উইলিয়ামকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে জুমানী উইলিয়াম ৩৩.৩০%, এরিক উলরিচ ১৮.৮০%, মেলিসা মার্ক-ভিভারিটো ১১.০২%, মাইকেল ব্ল্যাক ৮.২৯%, ইয়েদ্যানিস রদ্রিগেজ ৬.১০%, ডন স্মলস ৪.১০%, রাফায়েল এসপিনাল জুনিয়র: ৩.২৪%, রন কিম ২.৮৬%, ড্যানিয়েল ও ‘ডোনেল: ২.৮৫%, বেঞ্জামিন ইয়ে: ২.৬১%, নোমিকি কোনস্টঃ: ২.৩৩%, হেলাল এ শেখ: ১.২৫%, ডেভিড ইজেনবাচ ০.৭৯%, ম্যানি এলিকান্ড্রো ০.৭৫%, অ্যান্থনি টনি হার্বার্ট ০.৭৩%, ল্যাট্রিস ওয়াকার: ০.৫৭% এবং জারেড রিচ ০.২৩% ভোট পেয়েছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জুমানী উইলিয়াম একজন ফাইটার ও দীর্ঘ পরীক্ষিত একটিভিস্ট। শিশু অবস্থায় টরেট ও দুর্বল মনোযোগ থাকা সত্বেও গিফটেড ও টেলেন্ট স্কুল এবং ব্রুকলিন টেক স্কুলে পড়াশুনা করেছেন। পরবর্তীতে ব্রুকলিন কলেজ থেকে ব্যাচেলর ও মাস্টারস করেছেন। তিনি গত ৩ টার্ম যাবৎ ব্রুকলিনের ৪৫ ডিস্ট্রিক্টে কাউন্সিল মেম্বার হিসাবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রস্তাবিত ৫৩+ বিল আইনে পরিনত হয়েছে যা সিটি কাউন্সিলের ইতিহাসে রেকর্ড। আন্দোলন করতে যেয়ে একাধিকবার গ্রেতারও হয়েছেন। তার প্রস্তাবিত নিরাপদ কমিউনিটি আইন (ঈড়সসঁহরঃু ঝধভবঃু অপঃ) মেয়র ব্লুমবার্গের ভিটো সত্বেও পাশ হয়েছিল। এই আইনের ফলে গত ৫০ বছরের ইতিহাসে নিউইয়র্ক সিটি নিরাপদ সিটির মর্যাদা পেয়েছে। যাকে তাকে যত্রতত্র থামিয়ে পুলিশী হয়রানী এবং ৯/১১ এর পর মসজিদকে টার্গেট করাও বন্ধ হয়েছে তার এই আইনের মাধ্যমে। উপরন্তু, এই আইনের ফলে পুলিশের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করার জন্য নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে ইনস্পেকটর জেনারেলের দপ্তর খোলা হয়েছে। এমনকি পুলিশের কার্যক্রম মনিটর করার জন্য পুলিশের শরীরে বডি ক্যামেরাও সংযোজন করা হয়েছে। তিনি ইতোপূর্বে স্টেটওয়াইড নির্বাচনে লেফট্যানেন্ট পদে লড়েছেন। সে নির্বাচনেও তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এডভোকেসী গ্রুপ এবং বার্নি সেন্ডার্সসহ অনেক নির্বাচিত প্রতিনিধির সমর্থন পেয়েছিলেন।
উল্লেখ, নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট সিটির বিভিন্ন এজেন্সির উপর ‘ওয়াচ ডগ’ হিসাবে কাজ করেন। জনগণ ও সিটি কাউন্সিলের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম পাবলিক এডভোকেট অফিস। নিউইয়র্ক সিটির মেয়রের পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ পাবলিক অ্যাডভোকেট। মেয়রের অবর্তমানে পাবলিক অ্যাডভোকেট ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ইতোপূর্বে সাবেক মেয়র ব্লুমবার্গ এবং বর্তমান মেয়র বিল ডি ব্লাসিও পাবলিক এডভোকেট ছিলেন।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।