দেশে ডায়াবেটিক রোগী ৭৩ লাখ, অর্ধেকই নারী - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, দুপুর ২:৫১, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

দেশে ডায়াবেটিক রোগী ৭৩ লাখ, অর্ধেকই নারী

ADMIN, USA
প্রকাশিত নভেম্বর ১৪, ২০১৯
দেশে ডায়াবেটিক রোগী ৭৩ লাখ, অর্ধেকই নারী

দেশে ৭৩ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এদের প্রায় অর্ধেকই নারী। এছাড়া দেশে যত ডায়াবেটিক রোগী আছে, এদের ৯৫ শতাংশই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এদের শরীরে ইনসুলিন নিষ্ক্রিয় থাকে অথবা ইনসুলিনের ঘাটতি থাকে। এ ধরনের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও নিয়মিত ব্যায়াম অপরিহার্য। অন্যদিকে টাইপ-১ রোগীর সংখ্যা এ দেশে তূলনামূলক কম। এ ধরনের রোগীর শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে পরিবারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কারণ ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ, যে কারণে এই রোগের জন্য পরিবারের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

 

এমন বাস্তবতায় আজ ১৪ নভেম্বর পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘আসুন, পরিবারকে ডায়াবেটিসমুক্ত রাখি’। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এবার পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস থেকে বাঁচাতে এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ১৭০টি দেশে ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিই এই দিবসের প্রধান লক্ষ্য। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি ও তাদের অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্যমতে, বিশ্বে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ কোটিরও বেশি। টাইপ-২ ডায়াবেটিস যেহেতু ৭০ শতাংশই প্রতিরোধযোগ্য, ফলে এখনই যদি রোগটি প্রতিরোধ করা না যায়, তাহলে এই সংখ্যা ২০৪০ সাল নাগাদ প্রায় ৬৪ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। গত বছর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ১ লাখ মানুষের ওপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামে ডায়াবেটিসের হার বেশি। আর কম সিলেটে। ডায়াবেটিস সম্বন্ধে জানে ৭০ শতাংশ মানুষ। এর মধ্যে ভালো ধারণা রাখে ৩৯ শতাংশ মানুষ। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ২৬ দশমিক ৪ ভাগ নারীর ডায়াবেটিস ছিল। এদের ১৫ শতাংশের এক বছরের মাথায় ডায়াবেটিস হচ্ছে। গর্ভের শিশুও টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। এ অবস্থায় পরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

 

আরো পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ এইডসের চেয়েও ভয়াবহ

 

দিবসটি উপলক্ষ্যে গতকাল বুধবার বারডেম অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ডায়াবেটিস যেহেতু আজীবনের রোগ, তাই এ সম্বন্ধে নিজেকেও প্রশিক্ষিত হতে হবে। না হলে নিজেকে রক্ষা করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ করলে মা ও সন্তান দুুজনেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারবে। আর গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস হলে গর্ভের সেই সন্তানেরও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কাজিদের মাধ্যমে নবদম্পতিকে এ বিষয়ে সচেতন করার পরামর্শ দিয়েছি।’

 

ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, ‘ডায়াবেটিসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। তবে আমরা স্বস্তিতে নেই। কারণ প্রতি বছর নতুন করে যে পরিমাণ রোগী বাড়ছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। দেশে এমন কোনো পরিবার পাওয়া যাবে না, যে পরিবারে একজন ডায়াবেটিক রোগী নেই। এই রোগের যে ব্যয়ভার, তা অনেক পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। এখন একটা গণজোয়ার দরকার। ইচ্ছা করলেই এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।’

 

বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, তামাক ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যারা তরুণ বয়সে ধূমপান করে, তাদের ২০ শতাংশের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের যারা ধূমপান করে, তাদের ২৫ শতাংশ হূদেরাগে আক্রান্ত হয়। তিনি বলেন, তামাকপাতা ডায়াবেটিক রোগীর জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ধূমপানও ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বারডেম অ্যান্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজি বিভাগের ইউনিট-প্রধান অধ্যাপক ফারুক পাঠান।

 

দিবসের কর্মসূচি :ডায়াবেটিস দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় শাহবাগের বারডেম কার পার্কিং থেকে রমনা পার্কের গেট পর্যন্ত সম্মিলিত শোভাযাত্রা। সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে, রমনা পার্কের গেটের পাশে, ধানমন্ডি রবীন্দ্রসরোবর এবং এনএইচএন ও বিআইএইচএসের বিভিন্ন কেন্দ্রসংলগ্ন স্থানে বিনা মূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা। সকালে বারডেম মিলনায়তনে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের চতুর্থ তলায় হ্রাসকৃত মূল্যে হার্ট ক্যাম্পস

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।