ধান সংগ্রহে রেকর্ড, ব্যর্থ চালে - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ১:২৯, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

ধান সংগ্রহে রেকর্ড, ব্যর্থ চালে

ADMIN, USA
প্রকাশিত মার্চ ২, ২০২০
ধান সংগ্রহে রেকর্ড, ব্যর্থ চালে

আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহে রীতিমতো রেকর্ড করতে যাচ্ছে সরকার। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আমন ধান সংগ্রহের ইতিহাসে এবারই প্রথম ধান সংগ্রহের পরিমাণ ৬ লাখ টন ছাড়িয়ে গেছে। যা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মাত্র ২৬ হাজার টন কম। যদিও সংগ্রহের সময়সীমা আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার আগেই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তবে ধান সংগ্রহে রেকর্ড গড়লেও চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাল সংগ্রহের পরিমাণ এখনো ১ লাখ টন কম রয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৯১ টন ধান ও ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। এর মধ্যে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৮ টন সিদ্ধ চাল ও ৪৩ হাজার ৯০০ টন আতপ চাল। প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে ধান, ৩৬ টাকা দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা দরে আতপ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়ে আগামী ৫ মার্চ শেষ হবে।

খাদ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এর আগে আমন মৌসুমে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, ধানের মানসহ নানা জটিলতার কারণে বড়ো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেও ধান সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানো যায়নি। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইতিমধ্যে ৬ লাখ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নায্যমূল্য দিতে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছে। এবারই প্রথম মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে দেশের ১৬ জেলার ১৬টি উপজেলার কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে মধ্যস্বত্বভোগীদের সরকারের গুদামে ধান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মৃত কৃষক, প্রবাসী ব্যক্তির কৃষি কার্ড ব্যবহার করে গুদামে ধান দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

এসব অভিযোগ শিকার করে খাদ্য অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধান সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখেছি মৃত কৃষকের কার্ড এমনকি প্রবাসে রয়েছেন এমন কৃষকের কার্ডও ব্যবহার করে একশ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগীরা গুদামে ধান দিতে এসেছেন। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ কৃষি কার্ড হালনাগাদ করেনি। এছাড়া কার্ডে প্রচুর ভুল রয়েছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

এদিকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দিকে গেলেও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এই হিসেবে এখনো ১ লাখ টনের বেশি পরিমাণ চাল সংগ্রহ বাকি রয়েছে। হাতে রয়েছে আর মাত্র তিন দিন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে কোনোভাবেই চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়।

চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অটো রাইস মিল মালিক জানান, বাজারে চালের দাম বাড়তি। তাই মিলাররা সরকারের গুদামে চাল সরবরাহে আগ্রহী নয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার গত বছরের ১ ডিসেম্বর সংগ্রহ অভিযান শুরু করলেও প্রথমদিকে সংগ্রহ অভিযানে জোর দেয়নি। তখন ধানের দাম কম থাকায় চালের দামও কম ছিল। সে সময় চাল সংগ্রহে জোর দিলে লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হতো, কৃষকও ধানের নায্যমূল্য পেত।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।