চিরিরবন্দরে জেঁকে বসেছে শীত, বিপর্যস্ত জনজীবন

Daily Ajker Sylhet

১৮ জানু ২০২১, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ণ


চিরিরবন্দরে জেঁকে বসেছে শীত, বিপর্যস্ত জনজীবন

মোরশেদ-উল-আলম, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) :
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে জঁকে বসেছে শীত, বিপর্যস্ত জনজীবন। নি¤œ আয়ের মানুষেরা বাড়ি হতে বের হতে না পারাসহ কাজে যেতে না পারায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শেষ হয়েছে পৌষ। পড়েছে মাঘ মাস। শোনা যাচ্ছে মাঘ মাসের হাঁড়কাপানি শীতের পদধ্বনি। এরই মধ্যে শীত আর ঘন কুয়াশার চাদরে মাঝে মাঝে ঢাকা পড়ছে পুরো উপজেলা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবধি বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। শীত আর ঘন কুয়াশা সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস। আর ক্রমেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে কমছে তাপমাত্রা। গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শিশু, বয়স্ক, কর্মজীবী, শ্রমজীবী, দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষগুলোর দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে কয়েকগুণ।
ভোর রাত থেকে সারাদিন ঘন কুয়াশার ঢেকে থাকে গ্রাম ও শহরের মাঠ-ঘাট। ঘন কুয়াশার কারণে ৪০-৫০ মিটার দূরত্বের জিনিসও দেখা যাচ্ছেনা। দিনের বেলা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়ায় গত কয়েক দিন যাবত দুপুরে উত্তাপহীন সূর্যের আলো মাঝে মধ্যে কিছুটা দেখা মেলে। কিন্তু রাত ও দিনে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়ায় রাত ও দিনের বেলায় বিভিন্ন যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাইরে বের হচ্ছে না।
অটোভ্যান চালক মতিউর রহমান জানান, গত কয়েকদিন শীতের কারণে অটোভ্যান নিয়ে কাজে বের হতে পারেনি তারা। টানাটানির সংসারের কারণে বাধ্য হয়ে দুপুরে অটোভ্যান নিয়ে কাজের জন্য বের হয়েছেন। কিন্তু গ্রামে ও শহরে লোকজন খুব কম থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলার নান্দেড়াই গ্রামের কৃষক শওকত আলী জানান, বোরো চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করেছেন তারা। কিন্তু কনকনে শীত ও বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির কারণে তাদের সেই বীজতলা প্রায় নষ্ট হতে বসেছে। বীজতলার উপরে পলিথিন দিয়ে শীতের হাত থেকে বীজতলা রক্ষা করা হচ্ছে।
মধ্যবয়সী একরামুল হক নামে এক দিনমজুর জানান, ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে পারছিনা, ফলে অতীব কষ্টে দিনাতিপাত করছি।
উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ কবির হোসেন বলেন, ‘এই শিতে খুব কষ্ট পাওচি বারে। আর বুজি বাচা যায় না। দরকার ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাওচে না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আজমল হক বলেন, তীব্র শীতের ফলে ফুসফুসের সংক্রমণ ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব রোগে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া ও আমাশয়জনিত রোগীর সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা সিদ্দীকা বলেন, উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাঝে ৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরো কম্বল বরাদ্দ চেয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।