স্টাফ রিপোর্টঃ
করোনা প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে আগামী ২৮ জুলাই সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিতের আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
রোববার (২৫ জুলাই) সিলেট আসনের ৭ জন ভোটার ও সুপ্রিম কোর্টের ছয়জন আইনজীবীর করা এক রিটের শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।
সোমবার (২৬ জুলাই) রিটের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চে আজই রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। পরে বিষয়টি নিয়ে শুনানি শেষে নির্বাচন পেছানোর আদেশ দেয়া হয়।
এর আগে রোববার করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে আগামী ২৮ জুলাই সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশদাতা ৫ আইনজীবী হলেন, অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম, আল-রেজা মো. আমির, মো. জোবায়দুর রহমান, মো. জহিরুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।
নোটিশে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ২৫ জুলাইয়ের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সিলেট-৩ সংসদীয় আসনে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচন সংক্রান্তে আপনার বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। আপনি বলেছেন যে, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে চলমান লকডাউনেও নির্বাচন স্থগিত রাখা সম্ভব নয়।
নোটিশে বলা হয়, সংবিধান ১২৩ এর দফা ৪ শর্তানুসারে সিলেট উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত। তাই ২৮ জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচন স্থগিত করা যাবে না- এই বক্তব্য আইনের সঠিক ব্যাখ্যা নয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উচিত চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে বিধিনিষেধের সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজন না করা এবং ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্য যেকোনো সময় ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা। ৩ লাখ ৫২ হাজার ভোটারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের বর্তমান লকডাউন নীতিরও বিরোধী। সুতরাং, ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। তাই করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় সিলেট-৩ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য করোনা আক্রান্ত হয়ে এ বছরের ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর ৯০ দিন পেছালেও ২৮ জুলাই ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ডাব প্রতীকে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য (বহিস্কৃত) স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমেদ চৌধুরী মোটর গাড়ি মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর লকডাউন দিয়ে সরকার মানুষকে ঘরে রাখার চেষ্টাকালে প্রার্থীরা নেতাকর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তফসিল অনুযায়ী ২৬ জুলাই রাত ১২টায় প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকবে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।