মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে খেতের বীজআলু পঁচে গেছে। খেত থেকে সেই বীজআলু তুলে আবার নতুন করে বপন করছেন কৃষক। আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টিপাতের আভাস নেই ! অতিসুস্বাদু আলুর দোপেঁয়াজা মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ‘হঠাৎ মেঘের পানিত সব আলু পঁচে গেইছে, ফের জমিত হালচাষ করে হেনে আলু লাগানো শুরু করিছু। দেখু এইবার কী করে ওপরওয়ালা। ভয় নাগেছে, যদি ফের পানি আসে।’ ৩১ অক্টোবর রোববার সকালে কথাগুলো বলছিলেন আলু চাষি মোঃ মুন্জর হোসেন।
মোঃ সফিরুলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈলে উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নে। দুই সপ্তাহ আগের বৃষ্টিতে তার দেড় বিঘা জমির আলুর খেত পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ২৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে তার। চারজন শ্রমিক নিয়ে ঐ জমিতে পুনরায় আলু রোপণ করছেন তিনি। মোঃ মুন্জর হোসেনের মতো এই ইউনিয়নের আলু চাষি মোঃ লুতফর রহমান, মোঃ ইসলামউদ্দীন, মোঃ আবুল কালাম , মোঃসরিফুল ইসলাম প্রমুখ আগাম জাতের আলু রোপণ করেছিল। কিন্তু পানিতে সব পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা পুনরায় আলু রোপণ করছেন। ঐ ইউনিয়নের আরেক আলু চাষি মোঃ আব্দুল কাদের জানান, বৃষ্টির পর পানিতে ডুবে যাওয়া ১ বিঘা জমির আলুখেত থেকে আলু তোলে রৌদ্রে শুকিয়ে সংরক্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। পুরোটা পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। রানীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের সূত্রমতে, ২০২০ সালের আলু মৌসুমে রানীশংকৈল উপজেলায় ৩৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল। লক্ষমাত্রা ছিল ৩৭৪৫ হেক্টর। আলু উৎপাদন হয়েছিল ৯৯ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন। সে বছর বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষক-ব্যবসায়ীরা আলুতে ব্যাপক লাভ করেন। আর এতেই কৃষকেরা আলু চাষে ঝুঁকে পড়েন। চলতি বছরে কৃষকেরা ১ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। ২০২১/২২ অর্থবছরে আবাদের লক্ষমাত্রা ৩৯৫০ হেক্টর মে.টন। রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, অসময়ে বৃষ্টিতে আগাম জাতের ৫০ হেক্টর জমির আলুখেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, বৃষ্টিতে আমন ধান ছাড়াও শীতকালীন আগাম সবজি এবং আগাম আলুর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা আগাম আলু লাগিয়েছেন, তাদের রোপণ করা আলুবীজ পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ‘আশা করছি ১৫ দিনের মধ্যেই চাষিরা পুনরায় আলু রোপণ কাজ শেষ করতে পারবেন। আমরা সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।