সাইমূম ইভান::
১৩ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব বেতার দিবস। ‘সবাই মিলে বেতার শুনি, বেতারেই আস্থা রাখি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ সোমবার পালিত হবে বিশ্ব বেতার দিবস-২০২২। বাংলাদেশেও একাদশবারের মতো দিবসটি নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে।
তবে এবছর করোনা পরিস্থিতির কারনে আনন্দ শোভাযাত্রা ও উন্মুক্তস্থানে অনুষ্ঠান আয়োজন বাদ দিয়ে বেতারের স্টুডিওথেকে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের মধ্যে দিবসটির কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেতার সিলেটের আঞ্চলিক পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তারিক।
তিনি জানান বিশ্ব বেতার দিবস ২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার সিলেট ১৩, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারী ৩দিন ব্যাপি বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
তারমধ্যে ১৩ ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শুনতে পাবেন জনপ্রীয় শিল্পীদের অংশগ্রহনে সজীব বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান ‘আকাশ ভরা সুরের ধারা’। ওইদিন রাত ৯টা ৫মিনিটে প্রচারিত হবে বীরমুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, প্রবীণ গুনী শিল্পী ও নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধীদের অংশগ্রহনে বিশ্ব বেতার দিবস ২০২২ উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান ‘বাংলাদেশ বেতারের বহুমাত্রিকতা’।
এদিকে বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে ১৩ ফেব্রুয়ারী রবিবার বিকেল ৩টা থেকে বাংলাদেশ বেতারের সদর দপ্তর থেকে সম্প্রচার করা হবে আলোচনা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি।
এছাড়া ঢাকা থেকে আলোচনা, নাটক ও সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ ৩দিনব্যাপি নানা আয়োজন সম্প্রচার করে শোনানো হবে বাংলাদেশ বেতার সিলেটের এফএম ৮৮.৮ ও ৯০ মেগাহার্যে। একইসাথে এ অনুষ্ঠান শোনা যাবে বাংলাদেশ বেতারের ওয়েবসাইট ও মোবাইল এপসে।
উল্লেখ্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কোর মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী বেতার দিবস পালন করা হচ্ছে। প্রথম থেকে বাংলাদেশেও দিবসটি সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে।
তবে বেতার দিবস পালনের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে স্প্যানিশ একাডেমি অব রেডিও। তাদের অনুরোধে ইউনেস্কো ২০০৮ সালে বিশ্ব বেতার দিবস পালনের ঘোষণা দেয়।
প্রথম দিকে ৩০ অক্টোবর বিশ্ব বেতার দিবস হিসেবে ধার্য করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে ইউনেস্কো ১৩ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব বেতার দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ ১৯৪৬ সালের এদিনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল জাতিসংঘ রেডিও।
২০১২ সালেই সর্বপ্রথম দুনিয়াজুড়ে দিবসটি পালিত হয়। একই বছরে আন্তর্জাতিক রেডিও কমিটিও গঠিত হয়। বিশ্ব রেডিও দিবসের মূল অনুষ্ঠান পালন করা হয় ইউনেস্কোর সদর দপ্তর প্যারিসে। প্রথম থেকে বাংলাদেশেও দিবসটি সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে।
তার ব্যতীত যোগাযোগের এই শক্তিশালী মাধ্যমটি প্রথম ব্যবহার শুরু হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ প্রান্তে। আবিস্কারক হিসেবে ইতালির মার্কনিকে (১৮৯৮) ধরা হলেও বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু তারও চার বছর আগে (১৮৯৪) বেতারে শব্দ প্রচারে সফল হন।
বাংলাদেশ বেতারের যাত্রা শুরু হয় ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ঢাকায় একটি মিডিয়াম ওয়েভ স্টেশন চালু করে। ঢাকার নাজিম উদ্দীন রোডের দোতলা বাড়িতে (বর্তমানে বোরহান উদ্দিন কলেজ ভবন) অল ইন্ডিয়া রেডিওর ঢাকা কেন্দ্র চালু হয়।
১৯৪৭ সালের পর পাকিস্তান ব্রডকাস্টিং ঢাকা নামে এবং পরে ১৯৪৮ সালে রেডিও পাকিস্তান নামে তা পরিচিত হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ বেতার।
দেশে ২২টি বেসরকারি এফএম এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চলছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার ১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং ৩৫টি এফএম রেডিও পরিচালনা করছে। কমিউনিটি রেডিওগুলোর মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় এই গণমাধ্যম পৌঁছে গেছে। এর মাধ্যমে দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিজেদের কথা সরাসরি বলার সুযোগ পেয়েছেন।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।