রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হত্তয়া জরুরি - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৩:৫৪, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হত্তয়া জরুরি

newsup
প্রকাশিত জুন ৪, ২০২২
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হত্তয়া জরুরি

সম্পাদকীয় : যুদ্ধ নিয়ে লিখতে কারো ভালো লাগে না। কারণ যুদ্ধ কখনোই কোনো সুফল বয়ে আনে না। যুদ্ধ শুধু আনে ধ্বংস আর মৃত্যু। আনে হাহাকার আর দারিদ্র্য। যুদ্ধে যে দেশ নিজেকে বিজয়ী বলে ঘোষণা দেয়, প্রকৃতপক্ষে সে বিজয় দেশটির কোনো স্থায়ী সাফল্য এনে দেয় না। আপাতত বীরত্বের খেতাবে ভূষিত হলেও বৃহত্তর অর্থে সেটা তার ক্ষতির কারণই হয়। তাই যুদ্ধ এড়িয়ে দু’পক্ষের বিরাজমান সমস্যাগুলো কূটনীতির মাধ্যমে সমাধা করাই বুদ্ধিমানদের কাজ। কিন্তু যারা ক্ষমতার চশমায় মোহগ্রস্ত তারা এটা বুঝতে চান না। তাদের কাছে নিজের মসনদ, প্রতিপত্তি এবং জেদই আসল বিষয়। বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটা নাকি সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। যদিও একে এক অর্থে যুদ্ধ বলা যায় না। একতরফা যুদ্ধ বলাই ভালো। ইউক্রেন আক্রমণ করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর হতাহতের কিছু দাবির কথা শোনা গেলেও রাশিয়ান বাহিনীকে মোকাবেলায় তেমন কোনো আক্রমণ এখন পর্যন্ত চোখে পড়ছে না। বরং আক্রমণ যতটা দেখা যাচ্ছে; তা রুশ বাহিনীকে চালাতেই দেখা যাচ্ছে। সোমবার এ লেখা যখন লিখছি, তখন সেটা যুদ্ধের পঞ্চম দিন। রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে ঢুকে পড়েছে। এ লেখা যেদিন ছাপা হবে, যুদ্ধের ষষ্ঠ দিন হবে। তখন হয়তো আরো কোনো শহর রাশিয়া দখল করে নেবে কিংবা ইউক্রেনের বর্তমান সরকারের পতন ঘটবে। যুদ্ধের কথা নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায় না। তবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, ইউরোপীয় বা পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে যত অস্ত্র সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিই দিক না কেন যুদ্ধবিরতি হবে কিংবা ইউক্রেন বড় কোনো সাফল্য লাভ করবে এ মুহূর্তে এমন কিছু ঘটার লক্ষণ নেই।

তবে এটা ঠিক, করোনা মহামারীর এ দুর্যোগকালীন পৃথিবীতে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধটি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে। গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব বিপর্যয়ের মধ্যে ডুবে আছে। করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বের ২২৫টি দেশকে আক্রান্ত করেছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সাড়ে ৪৩ কোটি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মারা গেছে। বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। এর মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আক্রমণ অস্থিরতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব হবে ভয়াবহ। ইতোমধ্যে যুদ্ধের প্রভাব পড়তেও শুরু করেছে। সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। রুশ আক্রমণের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল এবং গমসহ নানা ভোগ্যপণ্য এবং সেবার দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ যুদ্ধ বাংলাদেশের জন্যও ভয়ের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশকে সঙ্কট মোকাবেলা করতে হতে পারে। তেমনি আরব দেশগুলো মোকাবেলা করবে খাদ্যসঙ্কট। এ যুদ্ধ বড় একটি পারমাণবিক ঝুঁকিরও সৃষ্টি করতে পারে। রুশ সৈন্যরা ইতোমধ্যে চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেছে। যুদ্ধে কোনো কারণে এ চুল্লি আক্রান্ত হলে কিংবা দুর্ঘটনার শিকার হলে তেজষ্ক্রিয়তার ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে বিভিন্ন দেশ। এ যুদ্ধ কত দিন স্থায়ী হয় এবং এটা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।