কম খরচে আমিয়াখুম যাবেন যেভাবে - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৫:০৬, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

কম খরচে আমিয়াখুম যাবেন যেভাবে

newsup
প্রকাশিত অক্টোবর ২২, ২০২২
কম খরচে আমিয়াখুম যাবেন যেভাবে

ডেস্ক নিউজ: অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশের ‘নায়াগ্রা ফলস’ খ্যাত আমিয়াখুম জলপ্রপাত বা খুমের-রাজ্যে (নাফাখুম, আমিয়াখুম, ভেলাখুম ও সাতভাই খুম) যাওয়ার। তাই অনেক কষ্টে অফিস থেকে ৪ দিনের ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম ইচ্ছা পূরণের উদ্দেশ্যে।
তবে এই দুর্গম পথে ট্র্যাকিং করা এত সহজ ছিল না। সাধারণত আমি একাই ট্যুর করি। তাই থানচি নেমে টুরিস্ট তথ্য কেন্দ্রে খোঁজ নিলাম আমিয়াখুমের কোনো টুরিস্ট দল আছে কিনা? থাকলে তাঁদের সঙ্গে যোগ হয়ে যাবো। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থেকে আসা ১০ জনের একটা দল তৈরি হয়ে গেলো। সবার কাগজপত্র এক করে থানায় গিয়ে এন্ট্রি করতে করতে বিকাল হয়ে যায়। তবে বিকাল ৫ টার পর সেনাবাহিনী রেমাক্রির উদ্দেশ্যে কোন ট্রলার ছাড়ার অনুমতি দেয় না, তাই বাধ্য হয়েই রাতটা থানচিতে থাকতে হলো।
থানচি থেকে পদ্মঝিরি
পরের দিন খুব ভোরে চলে যাই ট্রলার ঘাটে। ভোরে যখন থানচি থেকে পদ্মঝিরির উদ্দেশ্যে ট্রলারে রওনা দিলাম তখন দুপাশে পাহাড় আর মাঝখানে সাঙ্গু নদীর নীল স্বচ্ছ জলরাশির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পদ্মঝিরির মুখে নেমে ঝিরিপথ ধরে প্রায় ১ ঘণ্টা ট্র্যাকিং করে রুমাংজু পাড়ায় পৌঁছলাম। তখনও বুঝিনি সামনে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে।

রুমাংজু পাড়া থেকে পাহাড় বেয়ে বেয়ে হরিশ্চন্দ্র পাড়ার দিকে যাচ্ছিলাম, তখন বুঝলাম সামনে পথ কতটা ভয়ংকর ও দুর্গম। হরিশ্চন্দ্র পাড়া থেকে খেয়াং পাড়া বা নতুন পাড়া পর্যন্ত ৫-৬ টা ভয়ংকর সব পাহাড় পাড়ি দিতে হয়েছে। পাহাড়ে ওঠা-নামার প্রতিটি ধাপই ছিল একেকটি মৃত্যু কূপ।
বলে রাখা ভালো, সবাই নতুন পাড়া থেকে থুইসা পাড়া হয়ে দেবতা পাহাড় দিয়ে আমিয়াখুম যায়। এটাই টুরিস্টদের জন্য পরিচিত ট্রেইল। কিন্তু আমরা গিয়েছিলাম অতিরাম পাড়া হয়ে। অতিরাম পাড়ার রাস্তাটি পুরোটাই অফট্রেইল। অতিরাম পাড়ার ট্রেইলটি ভয়ংকর তবে খুবই সুন্দর। এর বিশেষত্ব হল চারদিক সবুজে ঘেরা পাহাড় আর বড় বড় বোল্ডার আকৃতির পাথর। তারমধ্য প্রবল বেগে গড়িয়ে আসছে স্বচ্ছ জলধারা। দুধ-সাদা রঙের ফেনা ছড়িয়ে অবিরাম বয়ে চলছে পাথরের গা ঘেঁষে। ভিজিয়ে দিচ্ছে পাশের বড় বড় বোল্ডার আকৃতি পাথরে চাতাল। সঙ্গে মন-মাতানো অবিরাম ছুটে চলা জলধারার পতন। এই দৃশ্য নিজ চোখে দেখলে আজীবন মনের গভীরে গেঁথে থাকবে আপনার।
এই ট্রেইলের ভয়ংকর দিক হলো বিশাল দানব আকৃতির বোল্ডারের উপর দিয়ে যেতে হবে যা খুবই পিচ্ছিল। আর অতিরাম পাড়ার পাহাড় প্রচণ্ড খাড়া এবং উঁচু। পথ এতই ভয়ঙ্কর ছিল যে আমাদের দলের কয়েকজন সদস্য অর্ধেক উঠে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। অবশেষে আমাদের গাইড এবং স্থানীয় পাহাড়িদের সাহায্যে অনেক কষ্টে অতিরাম পাড়ায় পোঁছাই। তখন রাত ৮ টা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।