ডেস্ক নিউজ: স্বামী তার স্ত্রীর উপর কর্তৃত্ববান ও দায়িত্বশীল। এটি মহান আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যদি কোনো স্ত্রী অবাধ্য হয়ে যায় তবে তাকে সঠিক ফেরানোর দায়িত্বও স্বামীর। স্ত্রীকে সঠিক পথে ফেরানোর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলে ওই স্বামীর জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত। কিন্তু অবাধ্য স্ত্রীকে তার মতের ওপর চলতে দেওয়া যাবে কি?
প্রথমত স্বামী নিজেই সব অন্যায়-অপকর্ম ও যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবে। তবেই অন্যায়-অপকর্ম ও নানা গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকা স্ত্রীকে সঠিক পথে ফেরাতে সাহস পাবে। আর যদি নিজেই অন্যায়-অপকর্মে নিয়োজিত থাকে তবে স্ত্রীকে সঠিক পথে ফেরাবে কীভাবে।
সুতরাং স্বামীর জন্য আবশ্যক হল, নিজে যেমন পাপাচার ও আল্লাহর নাফরমানি থেকে মুক্ত থাকবে তেমনি তার স্ত্রী-সন্তানদেরকেও মুক্ত রাখবে। পাশাপাশি স্ত্রীকে সব সময় ঈমান, তাকওয়া, সৎকর্ম ও পবিত্রতার উপর পরিচালনা করার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আল্লাহ তাআলা স্বামীকে দিকনির্দেশনা দিয়ে কোরআনুল কারিমে ঘোষণা করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ
‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে (স্ত্রী-সন্তানদের জাহান্নামের) সেই আগুন থেকে রক্ষা কর। যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাবের ফেরেশতারা। তারা আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয় তাই করে।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৬)
আয়াতে স্ত্রী-সন্তানকে দুনিয়ার সব অবাধ্যতা ও অন্যায় কাজ থেকে সঠিক পথে পরিচালিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং কারো স্ত্রী যদি অন্যায় কাজে জড়িত থাকে সেক্ষেত্রে স্বামী যদি তার স্ত্রীকে কোরআনের দেওয়া নিয়ম ও বিধান অনুযায়ী সঠিক পথের দিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা না করে। তবে স্বামীও হবে অপরাধী। তার এ অপরাধের কারণে স্বামীকেও জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে।
কোনোভাবেই পুরুষ তার বিবাহিত স্ত্রীকে মন মতো অন্যায়, অপকর্ম ও পাপাচারে লিপ্ত থাকার সুযোগ দিতে পারবে না। কেননা স্ত্রীর পাপাচারের অপরাধে স্বামীকেই জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে।
তাই স্বামীর জন্য এক্ষেত্রে নীরবতা অবলম্বন করা বা স্ত্রীর ইচ্ছার উপর দায়-দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকা জায়েজ নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা স্বামীকে স্ত্রীর উপর কর্তৃত্ববান ও দায়িত্বশীল বানিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَی النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰهُ بَعۡضَهُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ وَّ بِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِهِمۡ ؕ فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلۡغَیۡبِ بِمَا حَفِظَ اللّٰهُ ؕ وَ الّٰتِیۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَهُنَّ فَعِظُوۡهُنَّ وَ اهۡجُرُوۡهُنَّ فِی الۡمَضَاجِعِ وَ اضۡرِبُوۡهُنَّ ۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَکُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا عَلَیۡهِنَّ سَبِیۡلًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ عَلِیًّا کَبِیۡرًا
‘পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাযাতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাযাত করেছেনে। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান।’ (সুরা নিসা: আয়াত ৩৪)
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।