পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও অগ্রাধিকার দিতে হবে
০৭ আগ ২০২৩, ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে লিঙ্গ বৈষম্য; সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকচর্চা ঐতিহাসিকভাবে গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি লিঙ্গীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা অন্যান্য জনগোষ্ঠীও বৈষম্যের শিকার। যেমন- ট্রান্সজেন্ডার, হিজড়া সম্প্রদায়। তাই আমাদের প্রত্যেককেই স্পষ্ট করে লিঙ্গ বৈচিত্র্যকে স্বীকার করে সমতার জন্য কাজ করে যেতে হবে। কারণ লিঙ্গীয় সমতা অবশ্যই টেকসই উন্নয়নের একটি পূর্বশর্ত। সাধারণত নারী-পুরুষের পরিচয়, বৈষম্য- এসব বিষয়কে আমরা লিঙ্গীয় সমতার আওতায় ব্যাখ্যা করে থাকি। বাংলাদেশে নারীর প্রতি বৈষম্য ও লিঙ্গীয় সমতা প্রসঙ্গে বলতে গেলে, জেন্ডার সমতা নিয়ে বৈশ্বিক এবং জাতীয় পর্যায়ে বহু ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার পরও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। যদিও লিঙ্গীয় সমতার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।
বৈশ্বিক অতিমারি নারীর অবস্থাকে আরও বিপন্ন করে তুলেছে। পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ, বাল্যবিয়ে, অনিরাপদ গর্ভপাত, অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবা নারীর জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। অথচ নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসন ও জেন্ডার সমতা অর্জন এসডিজির একটি গুরুত্বপূর্ণ অভীষ্ট, যার ওপর অন্যান্য অভীষ্ট অর্জনের সাফল্যও অনেকাংশে নির্ভর করে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে হলে নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনের কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া জেন্ডার সমতা অর্জন ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান এবং স্বাধীনতার বৈষম্যহীনতার মূলনীতির বাস্তবায়নও সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার সিডও সনদ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং সে অনুযায়ী তারা কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি কতটুকু? এখন পর্যন্ত নারীর গৃহস্থালি কাজের কোনো স্বীকৃতি মেলেনি।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা এখন অনেক দৃশ্যমান। বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে নারীর ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু যৌন হয়রানি, সহিংসতা, নিরাপত্তাহীনতা, মজুরি বৈষম্য নারীর অগ্রগতি ও তার মেধার বিকাশকে ব্যাহত করছে ভয়াবহভাবে। এই চিত্র কম-বেশি সব পেশার নারীদের জন্য প্রযোজ্য। সরকার এসডিজি অর্জনে তার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। জেন্ডার সমতা অন্যতম সূচক। কিন্তু এ লক্ষ্য অর্জনে আমাদেরকে সমন্বিত কর্মসূচি এবং নীতিমালা গ্রহণ করা আবশ্যক। যেখানে সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার, মেধার বিকাশ-সহায়ক পরিবেশ, সহিংসতা রোধ, আর্থিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণসহ সব বিষয় বিবেচনায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেখানে জেন্ডার বৈচিত্র্যকে স্বীকার করে নেওয়াও একান্ত জরুরি। তাহলেই আমরা লিঙ্গীয় সমতার পথে পা রাখতে পারব।