বেগুনী শাড়ি ও আমাদের আঁচল
১৫ আগ ২০২৩, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট: ইদানিং নারী দিবস মানে যা বুঝলাম তা হচ্ছে সবার একটা করে বেগুনি শাড়ি থাকতে হবে। সব ধরনের দিবস তো আমরা ফেইসবুক বা অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায় বেশি উৎযাপন করে থাকি। তাই দেখে বলছি।
আর যদি বেগুনি শাড়ি না থাকলে ফেইসবুকে জানাতে হবে আমাকে কেও একটা বেগুনি শাড়ি দাও। আর ওখান থেকেই নারী সমাজের আসল অধিকার টুকু শাড়ীর গল্গে চলে গেলো সাথে পুরুষ সমাজের কাছে আরো একধাপ পিছিয়ে রইলো।
নারী অধিকার, নারী সন্মান, নারী পরিচয় একদিনের বেগুন শাড়ির মধ্যে ঢুকে নেই। বরং সবটুকুই আমাদের বেগুনী শাড়ির বাইরের প্রতিদিনের শাড়ির গল্প।
আমাদের সমাজের মেয়েদের একটা রেগুলার বিষয় হচ্ছে অন্যের অন্যায় মেনে নেওয়া। হোক সেটা পারিবারিক এবিউজিং, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, স্বামী কর্তৃক নির্যাতন।
তারা বেশির ভাগ সময়ই ভয়ে, নানা সামাজিক চিন্তায়, পারিবারিক চাপে প্রথম ধাপে মেনে নেয়। অনেক সময় প্রথম ধাপ অতটা ভয়ংকর হয় না যতটা শুরু হতে হতে শেষের দিকে যায়। অনেকে মনে করে একবার হয়েছে আর হয়তো হবে না বা বদলে যাবে। কিন্তু গল্প বদলায় না। সেটা উপন্যাসে তৈরি হয়।
প্লিজ, নারীরা কেনো মেনে নেয় বলে চিল্লায়েন না, আপনারাই বাধ্য করেন মেনে নিতে। একটুতেই ডিভোর্স? একটুতেই নির্যাতন? একটুতেই ধৈর্য্য হারানো মানুষ? এগুলো আমার আপনাদেরই ডায়লগ। তাই মেনে নেয়।
ধর্ষণ হলে দোষ দেন মেয়ের জামাকাপড়ের; তারপর সেই মেয়ে রাতে কেনো বের হইছিলো তার দোষ; তারপর যদি রহম হয় কিছু দোষ দেন ধর্ষণকারীর।
পারিবারিক এবিউজিং বলতে যে কিছু আছে সেটাই অনেকে মানে না। আর আজকালকার পোলাপান যে ড্রাগস আর পুরিয়া নেয় সেটার অনেক বড়ো একটা যন্ত্রণার কারন সেই পারিবারিক এবিউজিং সেটাও বেশি বুঝদারদের কানের নিচ দিয়ে যায়। নারী নির্যাতন এর সঠিক সংজ্ঞা কয়জনের জানা আছে?
অফিসের বস্ কোনো নারী কলিগের সাথে সে নারী বলে ইনটেনশনালি যদি বার বার কোনো মেন্টাল বা ফিজিক্যালি হ্যারেজম্যান্ট, মানসিক চাপ বা অত্যাচার, কাজের পরিবেশ নষ্ট করা বা তাকে দিয়ে জোর করে এমন কোনো কাজ করানো যেটা উচিৎ নয়; এটাকে নারী নির্যাতনের একটি সংজ্ঞা বলা যেতে পারে।
ঠিক একই সাথে এই ধরনের বিষয় একজন নারীও নারীর সাথে করতে পারে, সেটাও নির্যাতনের মধ্যে পরে। বাবা, ভাই, পরিবারের অন্য সদস্য যদি একজন দূর্বল নারীর সাথে এই ধরনের ব্যবহার করে থাকে তাহলে সেটা এক ধরনের পারিবারিক নারী নির্যাতন এর সংজ্ঞা। কিন্তু কাকে বলে এর সমাধান হবে?