নিউজ ডেস্ক: সুইডেনের কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও ক্ষমতাসীন সরকারের মিত্র জিমি অ্যাকেসন সম্প্রতি দেশটিতে নতুন মসজিদ নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং পুরোনোগুলো ভেঙে ফেলার প্রস্তাব করেছিলেন। তবে এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন। যেকোনো ধরনের উপাসনালয় ভেঙে ফেলার বিরোধিতা করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে আজ সোমবার আমিরাতভিত্তিক দ্য ন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জিমি অ্যাকেসন গত সপ্তাহেই একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। সে সময় তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের উচিত সেসব মসজিদ ধ্বংস শুরু করা—যেখান থেকে গণতন্ত্রবিরোধী, সুইডিশবিরোধী, সমকামী ও ইহুদিবিরোধী প্রচারণা তৈরি হচ্ছে।’ এ সময় তিনি নতুন কোনো মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দেওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
তবে অ্যাকেসনের এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম টিটি নিউজওয়্যারকে তিনি বলেন, ‘সুইডেনে আমরা ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো ধ্বংস করি না। যারা ইহুদিবিদ্বেষ প্রকাশ করে বা মুসলমানদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তারা আমাদের নিজের দেশের মানুষকে আঘাত করছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সুইডেন ও সুইডিশ স্বার্থের ক্ষতি করছে।’
অ্যাকেসনের বক্তব্যকে সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির উচ্চপর্যায়ের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষজ্ঞ ম্যাগনাস র্যানস্টর্প। তিনি বলেন, ‘এটি সুইডেনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা হুমকির অবনতি ঘটাতে পারে এবং সুইডেনকে ইসলামবিরোধী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। আমরা এখনো ন্যাটোতে যোগদান করিনি এবং এরদোয়ান এই মন্তব্যটি আমলে নিতে পারে।’
অ্যাকেসনের মন্তব্য সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টিকে জটিল করে তুলতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন তুরস্কে দায়িত্ব পালন করা দেশটির সাবেক রাষ্ট্রদূত মাইকেল সাহলিনও। গত বছরের মে মাসে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগদানের অনুরোধ জানিয়েছিল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সেই সময় কোরআন পোড়ানোসহ মুসলিমবিদ্বেষী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। এ অবস্থায় অ্যাকেসনের মন্তব্যটি ন্যাটোতে সুইডেনের সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন বাধা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।