শীতকালে যেসব ইবাদত করতে হবে
২৪ জানু ২০২৪, ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

ধর্ম ডেস্ক: সুজলা-সুফলা বাংলাদেশ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বিশেষ দান।
ষড়ঋতুর এ দেশের প্রকৃতি বছরে ছয়বার ভিন্ন ভিন্ন রূপ ও সাজ-সজ্জায় আমাদের
সামনে আগমন করে। ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় অফুরন্ত এ রূপ রস আর কোথাও নেই।
তাই কবি বলেন, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি/ সকল দেশের রানী সে যে
আমার জন্মভূমি।’
শীতকালে আমরা অধিকহারে ঠান্ডা অনুভব করি, অপরদিকে গ্রীষ্মকালে অনুভব করি
প্রখর তাপ। এ দুই কালে ঠান্ডা ও গরমের প্রচণ্ডতার কারণ হাদিসে নববিতে বর্ণিত
হয়েছে।
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট এই বলে অভিযোগ
করেছিল যে, হে আমার প্রতিপালক! (প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে) আমার এক অংশ অন্য
অংশকে গ্রাস করে ফেলেছে। তখন আল্লাহতায়ালা তাকে দুটি শ্বাস ফেলার অনুমতি
দিলেন। একটি শীতকালে, অপরটি গ্রীষ্মকালে। আর সে দুটি হলো, তোমরা গ্রীষ্মকালে
যে প্রচণ্ড উত্তাপ এবং শীতকালে যে প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভব কর তাই।’ (সহিহ বুখারি
ও সহিহ মুসলিম)।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা গরমের যে
প্রচণ্ডতা অনুভব করো তা জাহান্নামের গরম নিশ্বাসের কারণেই। আর শীতের তীব্রতা
যা পাও তা জাহান্নামের ঠাণ্ডা নিশ্বাসের কারণেই।’ (সহিহ বুখারি)।
পবিত্র কুরআন মাজিদে শুধু দুটি ঋতুর কথা উল্লেখ রয়েছে। তা হলো শীত ও গ্রীষ্ম।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘তাদের (কুরাইশ বংশের
লোকদের) অভ্যাস ছিল শীত ও গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ।’ (সূরা আল-কুরাইশ, আয়াত নং-
০২)।
শীতকালকে রাসূলে কারিম (সা.) মুমিনের জন্য ঋতুরাজ বসন্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে রাসূল (সা.) বলেন-‘শীতকাল হলো মুমিনের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমাদ)।
সব ঋতুই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টি। তাই আল্লাহতায়ালার কাছে কোনো
ঋতুই আলাদা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত নয়। তবে কোনো ঋতুতে বিশেষ কিছু সুবিধা থাকে। যেমন
শীতকালে দিন ছোট হয় এবং সূর্যের তাপ কম হওয়ায় শীতকালে পানির পিপাসা কম হয়ে
থাকে। তাই সহজেই শীতকালীন রোজা রাখা যায়।
অপরদিকে শীতকালে রাত দীর্ঘ হয়। একজন মানুষের স্বাভাবিক ঘুমের পরও শীতকালে
রাতের আরও কিছু অংশ বাকি থাকে। ফলে কেউ চাইলে সহজেই রাতের বাকি অংশ
সালাতুত তাহাজ্জুদ, জিকির-আজকারের মাধ্যমে কাটিয়ে দিতে পারে।
সে হিসাবে হাদিস শরিফে শীতকালীন আমলের বিশেষ মর্যাদার কথা বর্ণিত হয়েছে। এক
হাদিসে রাসূলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন
নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় মুমিন রোজা রাখতে পারে।’
(বায়হাকি)।