অনলাইন ডেস্ক:
ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু জনপ্রিয় ভোটই নয়, এবার তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ফলে ট্রাম্প এবার অনেকটা বেপরোয়া থাকবেন বলেই ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
ট্রাম্পের নিরঙ্কুশ বিজয়ে আমেরিকার রক্ষণশীলেরা বেশ খুশি। তবে সেলিব্রিটিদের অধিকাংশই ট্রাম্পের এই প্রত্যাবর্তন মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের আশঙ্কা এবার আর উদারপন্থী, সংস্কৃতিবানেরা মানসম্মান নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করতে পারবেন না!
এই তালিকায় আছেন ‘বেসিক ইনস্টিংক্ট’ তারকা শ্যারন স্টোন এবং ‘গেম অব থ্রোনস’ তারকা সোফি টার্নারের মতো সেলিব্রিটি। এ ছাড়া গায়িকা ও অভিনেত্রী চের এবং অ্যামেরিকা ফেরেরা, রেভন সাইমন, মিনি ড্রাইভারেরাও একই কথা ভাবছেন। এমনকি ট্রাম্পের অন্যতম সহযোগী বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের রূপান্তরকামী কন্যা জেভিয়ার আলেকজান্ডার মাস্কও বলছেন, আমেরিকায় আর থাকা যাবে না!
ট্রাম্প জয়ে উচ্ছ্বসিত বাবা মাস্ক, আর ওদিকে মেয়ে ভুগছেন আতঙ্কে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরে মাস্কের কন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, আগামী দিনে আমেরিকায় তাঁর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়াই উচিত!
শোনা যাচ্ছে, হলিউড অভিনেত্রী শ্যারন স্টোন ইতালি পাড়ি জমানোর চিন্তাভাবনা করছেন। চলতি বছর জুলাই মাসেই ‘বেসিক ইনস্টিংক্ট’ স্টোন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়বেন তিনি। থিতু হতে চান ইতালিতে। সেখানে তাঁর একটি বাড়িও আছে। ট্রাম্পের নাম না করেই শ্যারন বলেছিলেন, ‘এই প্রথম এমন কাওকে দেখলাম, যিনি এত ঘৃণা ও জুলুমের পরিবেশের মধ্যে থেকেও প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে নামতে পেরেছেন।’
ব্রিটিশ অভিনেত্রী সোফি টার্নার ট্রাম্পের জয়ের পর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আর থাকবেন না, এবার জন্মস্থান ব্রিটেনে ফিরে যাবেন।
মার্কিন অভিনেত্রী–গায়িকা চের বরাবরই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল রুলের সময় তাঁর স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে গিয়েছিল। চের বলেছিলেন, ‘গতবার আমার আলসার হয়ে যাচ্ছিল। এবারও যদি তিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে ফিরে আসেন, আমাকে দেশে ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে।’
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন ৫৪ বছর বয়সী ব্রিটিশ অভিনেত্রী মিনি ড্রাইভার। গত জুলাইয়ে দেশ ছাড়ার সময়ই ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনার কথা আঁচ করে আগেই বলে দিয়েছেন, ‘ট্রাম্প এলে আমি হয়তো আর ফিরব না।’
এই তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এ ছাড়া বারবারা স্টেইস্যান্ড, মাইলি সাইরাস, লেনা ডানহ্যাম, অ্যামি শুমার এবং হুপি গোল্ডবার্গের মতো তারকারা অবশ্য অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন, ট্রাম্পকে আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাওয়া ভালো!
তবে চমকে দিয়েছেন মাস্কের কন্যা। রূপান্তরকামী কন্যা অবশ্য বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বেশ আগেই। জেভিয়ার আলেকজান্ডার মাস্ক ২০২১ সালের জুন মাসে নিজের নাম পরিবর্তনের আবেদন করেন। জেভিয়ান থেকে হয়েছেন ভিভিয়ান। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর ‘বায়োলজিক্যাল’ বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন তিনি।
২০২১ সালের পর বদলে যায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। ক্ষমতায় আসেন ডেমোক্র্যাট পার্টির জো বাইডেন। কিন্তু রূপান্তরকামীদের প্রবল বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প ফিরে এসেছেন হোয়াইট হাউসে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মাস্ক কন্যা ভিভিয়ান। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘আমি বহুদিন ধরেই ভেবেছি। তবে এখন নিশ্চিত হলাম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমার কোনো ভবিষ্যৎ নেই। যদিও উনি (ট্রাম্প) মাত্র ৪ বছর ক্ষমতায় থাকবেন, হয়তো রূপান্তরকামীদের ওপর আচমকাই কোনো নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে না। কিন্তু যেসব মানুষ বিপুল ভোট দিয়ে ট্রাম্পকে জিতিয়েছেন, তাঁরা তো থাকবেনই।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।