ডেজিং করে ইটভাটায় মাটি বিক্রি : অন্যদিকে নদীতে বোরো চাষ
০৯ মার্চ ২০২০, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

বদলগাছী (নওগাঁ) ঃ
নওগাঁর বদলগাছীতে বালুদস্যুদের বেপরোয়া তৎপড়তায় শুকনো নদীর তলায় ড্রেজিং করে পুকুর ও দীঘির আকারে গর্ত বানিয়ে ইট ভাটায় চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব। অন্যদিকে ছোট যমুনা নদীর বুক জুড়ে শুরু হয়েছে বোরো ধান চাষের ধুম। এলাকাবাসীর অভিযোগ অবৈধ্যভাবে বালু উত্তলোন করা বিষয়ে বারবার উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ দিলেও বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননা।
এলাকা ঘুড়ে দেখা যায়, ছোট যমুনা নদী আর আগের মত নেই। বদলগাছীর ছোট যমুনা নদীর কোন অংশে কোথাও বালু দেখা যায় না। তার পরেও প্রতি বছর বালুমহাল লীজ দেওয়া হয়। ইজাদাররা লীজ নিয়ে লীজের শর্ত ভেঙ্গে যত্র তত্র নদীর তলায় পুকুর ও দীঘির মত গভীর গর্ত করে মাটি ও বিট বালু তুলে ইট ভাটায় বিক্রি করছে। বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে ছোট যমুনার বালু ফুড়িয়ে এসেছে। তারপরও থেমে নেই তৎপরতা। বালু ফুরিয়ে যাওয়ায় নদীর তলায় পলী জমেছে। এজন্য নদীর বিভিন্ন অংশে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চাষ করা হচ্ছে বোরো ধান। এর মধ্যে চোখে পড়ার মতো একটি দৃশ্য কাদিবাড়ী গ্রাম এলাকায়। এখানে দুই বিঘা, দেড় বিঘা, কেউবা তিন বিঘা পযর্ন্ত নদীর তলায় বোরো ধান চাষ করছে। কাদিবাড়ী গ্রামের জহুরুল বাবু জানায়, গত বছর নদীর বুকে ধানের ভাল ফলন পেয়েছে এবারো তারা আশাবাদী।
অপর দিকে, উপজেলার দাউদপুর মোড়ে শুকনো নদীতে ড্রেজিং করে নদীর বুকে বৃহৎ গর্ত করে মাটি ও বিটবালু তুলে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড্রেজিং করা হলেও সেখানে বালু উঠছে না। কারন নদীতে বালু সংকট এবং নদীর দু-পার হুমকির মুখে পরেছে। পশ্চিম পাশের্^ ভেঙ্গে পড়ছে ফসলী জমি। এভাবেই নদীর অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। যত্র তত্র বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তলা সমতল নেই। উচু নিচু হওয়ায় নদীর ভারসাম্য হারিয়ে গেছে। সমুদ্রে পৌঁছিতে নদীর গতি ঠিক রাখার জন্য যেমন পানি দরকার তেমনিই নদীর শরীরের গঠন আর ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য বালু দরকার। পানি ও বালু কেড়ে নিলে নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। যেভাবে নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর এই ছোট যমুনা নদী। অপরদিকে বালু বহনকারী ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলের কারণে গত ৭/৮ মাস আগে নির্মিত পাকা করণ রাস্তাটিও ভেঙ্গেগেছে অনেক জায়গায়।
এলাকাবাসী জানান, নদীতে অবৈধ্যভাবে ডেজিং করে মাটি ও বিটবালু উত্তলোন করায় আশে পাশের কৃষি জমি ভাঙ্গনের হুমকিতে পরেছে। এবং বালুর বেপরোয়া গাড়ী চলাচলের কারণে ৭/৮ মাস আগে তৈরীকরা পাকা রাস্তাটিও প্রায় ভেঙ্গেগেছে। আরা এসব বিষয়ে উপজেলার নির্বাহী অফিসারকে বারবার অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে বালু বাবসায়ী অর্জুন কুমারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, নদীতে বালু নেই ড্রেজিং করে মাটি ও বিটবালু উঠছে তাই ইটভাটায় দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে বেশি দামে বালু মহাল লীজ নেওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাঃ আবু তাহির এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমি বিষয়টি দেখতেছি। এলাকাবাসী অভিযোগ অবৈধ্যভাবে বালু উত্তলোন বন্ধ করার জন্য বারবার আপনাকে অভিযোগ দিলেও আপনি ঐসব বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান।