বিভাগীয় প্রার্থীতা বহাল রেখে তরুণদের প্রাথমিক শিক্ষায় আসার পথ খুলে দিন - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৪:০০, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

বিভাগীয় প্রার্থীতা বহাল রেখে তরুণদের প্রাথমিক শিক্ষায় আসার পথ খুলে দিন

ADMIN, USA
প্রকাশিত জুলাই ২৫, ২০২০
বিভাগীয় প্রার্থীতা বহাল রেখে তরুণদের প্রাথমিক শিক্ষায় আসার পথ খুলে দিন
ফারজানা আক্তার,বিএসএস(অনার্স) এমএসএস, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,সহকারী শিক্ষকঃ
চোখগুলো ছল ছল।মুখের দিকে তাকালে ধুকরে উঠছে বুক।কেমন যেন শূণ্যতা আমাকে ঘিরে ফেলল।এ যেন পদার্থের বিকিরণ পদ্ধতি।কোন মাধ্যম ছাড়াই আমাকে সমভাবে আবিষ্ট করছে!
“ম্যাডাম বিশ্বাস করেন,ভাবছি বিভাগীয় প্রার্থীতার মাধ্যমে এক্সাম দিব।শুরুতে অনেক পড়েছি।এখন বই দেখলে এক বিস্তর উদাসীনতা কাজ করে।আমরা কি দোষ করলাম?? আমাদের কি কোন যোগ্যতা নেই?”কথাগুলো বলছিলেন সহকারী শিক্ষক রুবেল হাসান(ছদ্মনাম)।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স মাস্টার্স। তাঁর প্রোফাইল ঘুরে দেখলাম উনি সহকারী শিক্ষক তা উল্লেখ নেই।জানতে চাইলাম কেন উল্লেখ নেই?? উত্তরে বলেন, “যার গতি নাই তিনি হন প্রাইমারির মাস্টার।”
এ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না।রুবেল স্যারের মত এমন শত শত স্যারের সন্ধান মিলবে।শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে চায় না,তার ভেতরে হাহাকার।এ হাহাকার নিয়ে সে পারবে তো ক্লাসে মানসম্মত শিক্ষা দিতে??বর্তমানে করুনাকালীন অনলাইন ক্লাসে যতই হাসিখুশি শিক্ষণ বিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে ক্লাস নিন না কেন তার পেছনে রয়েছে বুকফাটা আর্তনাদ।বলা যায় অভিনয় করে যায়।সর্ব বিষয়ে দক্ষ শিক্ষকের করুণ অবস্থা।এভাবে কি টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।১৭ টা লক্ষ্যের চার নম্বর লক্ষ্য এমনভাবে কি অর্জন করা যায়?
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চাকরি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে পদোন্নতির জন্য বিধিমালা ২০১৭ আছে।এ বিধি অনুযায়ী সর্বনিম্ন চার বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা এবং চাকরি স্থায়ীকরণ হতে হবে।ক্যাডার হিসেবে১৪ বছর পূর্ণ হবার পর বা ৫০ বছর হয়ে গেলে এক্সাম দিতে পারবে ।এক্সাম হবে প্রথমপত্রঃ বাংলাদেশ ও চলতি বিষয়াবলী,দ্বিতীয়পত্রঃ সকল সরকারি অফিসে প্রযোজ্য আইন,বিধি পদ্ধতি,তৃতীয়পত্রঃক্যাডার সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী এবং ব্যবহারিক যুক্ত।মোট সময় তিন ঘন্টা আর প্রত্যেক পত্রের মান ১০০ শ করে।
কনস্টেবলের ১৭ তম গ্রেড থেকে ১০ ম গ্রেড এস আই হওয়া যায়।
আমরা শিক্ষক।বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স করা আছে।শিক্ষণ বিজ্ঞান ডিপিএড ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।এটির অর্জনে বেতন কমে আবার বর্তমানে কোন গ্রেড নয়।অনেকের বিএড,এমএড ডিগ্রি আছে।আমরা শিক্ষক।আমরা সরকারি কর্মচারী।তাহলে প্রজাতন্ত্রের সকল সরকারি কর্মচারীর জন্য এক নিয়ম নয় কেন?? কেন আমরাদের সব কিছু কেড়ে নেওয়া হয়?? উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আমরা  সমস্যা,দাবি বলতে পারি না?? কেন রীট করতে হয়?? প্রশিক্ষণ,ট্রেইনার( প্রশিক্ষক),পিএসসি ডিউটি, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক,বদলী সব ক্ষেত্রে তথাকথিত নেতার দৌরাত্মা থেকে যাচ্ছে??
সার্বিক প্রেক্ষাপট চিন্তা করে প্রাথমিক শিক্ষায় তরুণ মেধাবী শিক্ষকদের ধরে রাখতে,প্রাথমিক শিক্ষার মান আকাশ ছোঁয়া করতে বিভাগীয় প্রার্থীতার মাধ্যমে পদোন্নতির বিকল্প নেই ।সব যোগ্য শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে যাবেন এমন নয়।জ্ঞান চর্চায় ব্রত হবে,শিখন প্রক্রিয়া দক্ষ হয়ে উঠবে।আর কেউ রুবেল হাসান স্যারের মত নীরবে নিভৃতে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে না।আশা করি কর্তৃপক্ষ সবিনয়ে আমাদের এ চাওয়া পূরণ করবেন।২০১৯ খসড়া বাতিল করে৷ সহকারী শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থীতা বহাল রেখে মানসম্মত শিক্ষার পথে আর শিক্ষকতা পেশাকে এক আকর্ষণীয় পেশায় পরিণত করবেন।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।