জালাল উদ্দিন, রংপুর ॥
তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ১৮৩৪ সালে তিস্তা নদীর ওপর ২হাজার ১শ’১০ ফুট দৈর্ঘ্য রেলসেতু নির্মাণ করেন । সেতুটির উত্তর পাশে লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকা এবং দক্ষিণ পাশ যুক্ত হয়েছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সঙ্গে। ১শ’৮৬ বছর বয়সের এ সেতুটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল ১০০ বছর। ৮৬ বছর আগে সেতুটির মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও জোড়াতালি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে এখানও ১৬টি ট্রেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেতুটির একটি গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে সেতুটি পুনরায় চালু করা হয়। ১৯৭৭ সালে রেলওয়ে ও সওজ বিভাগ যৌথভাবে রেলসেতুতে মিটারগেজ লাইনের পাশে ২৬০টি স্টিলের টাইফ প্লেট ও কাঠের পাটাতন স্থাপন নির্মাণ করেন। বর্তমানে সেতুটির লাইনের অধিকাংশ স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। খুলে গেছে স্লিপারের প্লেট ও নাটবল্টু। এতে যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ট্রেনের যাত্রীসহ স্থানীয়রা। তিস্তা এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম, আজাহার আলী, করিম মিয়া বলেন, তিস্তা রেলসেতুটির ওপর ট্রেন উঠলে সেতুটি কেঁপে উঠে। সব সময় আতঙ্কে থাকি। নিয়মিত ট্রেনের যাত্রী আসাদুজ্জামান খান্দকার, আরিফ ও তোফায়েল বলেন, তিস্তা রেলসেতুতে ট্রেন উঠলে বুকটা কেঁপে উঠে। দীর্ঘদিন ধরে জোরাতালী দিয়ে সেতুটিতে ট্রেন চলাচল করছে।
লালমনিরহাট রেলওয়ে সূত্র জানায়, তিস্তা নদীর ওপর আরেকটি রেলসেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই- বাচাই চলছে। নতুন সেতু নির্মাণ করার কথা রয়েছে। পুরাতন সেতুর পশ্চিম পাশেই আরেকটি ডুয়েল গেজ সেতু নির্মাণে খুব দ্রুত কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে রেলওয়ের লালমনিরহাট ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ শফিকুর রহমান তিস্তা রেলসেতু মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এখনো ঝুঁকিপূর্ণ নয় দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, লালমনিরহাট রেলওয়ে রংপুর বিভাগের আওতাধীন ছোট-বড় অনেক সেতু মেরামত কাজ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কোনো সেতু নেই। তিস্তা রেলসেতু মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সেতুর পশ্চিম পাশে সরকারের নতুন করে আরো একটি ডাবল বোর্ড গেজ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।