রাশেদুল হাসান কাজল, ফরিদপুর
ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফরিদপুরে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এদিকে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী সুলতান মাহমুদ।
তিনি বলেন, গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুদিন পানি বৃদ্ধি হবে না। ২৬ তারিখের পর থেকে পানি কমতে শুরু করবে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে ফরিদপুরের ৫০ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছেন। জেলার সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, ডিক্রিরচর,চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন এবং চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার শতাধিক গ্রামে এই পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি সড়ক।
ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ১২ গ্রাম বন্যাকবলিত। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পানিবন্দি মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।’
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের ১৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা বলেন, ‘পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গবাদি পশুর খাদ্য মজুত আছে। বন্যা দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন মোল্লা জানান, উপজেলার ঝাউকান্দা, হরিরামপুর, চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি। উপজেলার চার ইউনিয়নের তিনটিই পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে।
সদরপুরের তিনটি ইউনিয়ন দিয়ারানারকেল বাড়িয়া, চরনাছিরপুর ও চরমাইরের ১৫ গ্রামে পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান বলেন, ‘পানিবন্দি মানুষের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে সরকারি সহায়তা নিয়ে যেতে পারবো।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষের খবর রাখছি। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। ইতোমধ্যেই সদর উপজেলার কিছু জায়গায় খাদ্য সহায়তা দেওয়া শুরু করা হয়েছে।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।