জাফলংয়ে পর্যটকদের ঢল, খুশী ব্যবসায়ীরা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ১:০২, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

জাফলংয়ে পর্যটকদের ঢল, খুশী ব্যবসায়ীরা

newsup
প্রকাশিত মে ৫, ২০২২
জাফলংয়ে পর্যটকদের ঢল, খুশী ব্যবসায়ীরা

ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। বুধবার সকাল হতে ঢল নামে দেশের অন্যতম এ পর্যটন কেন্দ্রে। দেশ-বিদেশের রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক, দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত প্রকৃতি কন্যা জাফলং। ঈদুল ফিতরের আনন্দ পরিবার পরিজন নিয়ে কাটাতে জাফলংকে বেছে নেন তারা।

বুধবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুরো জাফলং যেন লোকে লোকারণ্য। পিকআপ, প্রাইভেট কার, বাস ও ট্রাকযোগে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। পুরো এলাকা ছিল পর্যটকবাহি যানবাহনের সারি। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের গুচ্ছগ্রাম থেকে তামাবিল পর্যন্ত দীর্ঘকায় যানযট ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রচন্ড গরমে চরম ভোগান্তিতে পড়েন আগন্তকরা। পর্যটক সেবায় ব্যস্ততায় দেখা যায় পর্যটক স্বেচ্ছাসেবক, নিযুক্ত টুরিস্ট পুলিশ।

জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যটন স্পটের গুরুত্বপূর্ণ সবকটি পয়েন্টে সার্বক্ষনিক পর্যটক নিরাপত্তায় থানা পুলিশের এসআই এমরুল, এএসআই মশিউর রহমানের সমন্বয়ে একাধিক টিমের টহল চোখে পড়ে। সাতার না জানা পর্যটক মৃত্যু হ্রাসে হ্যাণ্ড মাইক হাতে পর্যটকদের সতর্কতামুলক নির্দেশনা দিতে দেখা যায় পর্যটন পুলিশের ইন্সপেক্টর রতন শেখকে। লাইফ জ্যাকেট জরুরি উদ্ধার সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকতে দেখা যায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের।

গাজিপুর থেকে আসা পর্যটক দম্পতি সোহেল মাহমুদ তামান্না ইসলাম বলেন, ‘সারা দেশ এমনকি বহিঃবিশ্বেও জাফলং পর্যটন কেন্দ্রের আলাদা পরিচিতি রয়েছে। জাফলং আগেও এসেছি আজও আসছি। খুব ভালো এখানকার পরিবেশ প্রকৃতি। পাহাড় টিলা সবুজের সমারোহ, স্বচ্ছ জলারাশি, দিগন্ত জুড়ে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যাবলি পর্যটকদের হৃদয়ে বাড়তি আনন্দের খোরাক জোগায়।’

তারা বলেন, ‘সরকারি উদ্যোগে জাফলংকে দ্রুত পর্যটন অবকাঠামোগত উন্নয়নের আওতায় নিয়ে আসা হলে জাফলং থেকে প্রতি বছর সরকার প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে। এ থেকে স্থানীয় বৃহৎ জনগোষ্ঠীর পর্যটনখাতে জড়িত হয়ে কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।

পিকআপ ভ্যানে সামিয়ানা টানিয়ে আর বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে এসেছেন তানভির, জিসান, কায়সার, অমল, মিলন, সোহাগসহ ১৬ সদস্যের একটি প্যাকেজ টিম।

কলেজে পড়ুয়া এসব শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতি বছর ঈদের ঘুরাঘুরিতে তারা জাফলং আসে, এবারও এসেছেন। জাফলংয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপার ভান্ডার। বেড়াতে আসা পর্যটক, দর্শনার্থীদের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধা প্রসারিত করনে সরকারের প্রতি তাগিদ দেন তারা।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে আসা শিক্ষক পর্যটক বলেন, ‘আমি বহুবার জাফলং এসেছি। কিন্তু জাফলংয়ের আগের সেই নয়াভিরাম দৃশ্য নেই।’

জাফলঙয়ের পূর্বের রূপ লাভন্য ফিরিয়ে আনতে ইকো সিস্টেম চালুর পাশাপাশি পর্যটনখাতে সরকারের বিনিয়োগ বাড়ানো এখনই দরকার বলে মনে করেন তিনি।।

দুপুর ২টায় জাফলং জিরো পয়েন্টে প্রখর রোদে হ্যান্ড মাইক হাতে পর্যটকদের উদ্দেশ্যে সতর্কতামুলক নির্দেশনা দিতে দেখা যায় টুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর রতন শেখকে।

কথা হলে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জাফলংয়ে ঢল নেমেছে ঘুরতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের। সর্বত্রই মুখরিত পরিবেশ। আগন্তুকদের নিরাপত্তার কাজে আমাদের প্রচেষ্টার কোনো কমতি নেই। পর্যটকদের নিরাপদ আগমন ও নিরাপদ প্রস্থানের জন্য আমাদের টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল জানান, জাফলংসহ গোয়াইনঘাটের সবকটি পর্যটন স্পষ্টের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় থানা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। চুরি ডাকাতি ছিনতাই ইভটিজিং রোধে পোষাকধারী ইউনিটের পাশাপাশি সাদা পোষাকেও টহল জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে জাফলংসহ সবকটি স্পটে বেড়াতে আসা ভ্রমনপিপাসীদের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান জানান, দুটি ঈদসহ সরকারি বিভিন্ন ছুটিতে জাফলংসহ গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পট সমুহে ঢল নামে পর্যটক-দর্শনার্থীদের।এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক তদারকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। টুরিস্ট ও থানা পুলিশ বিভাগের পাশাপাশি পর্যটন স্বেচ্ছাসেবকসহ বাড়তি নজরদারি রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপদ আগমন এবং ফিরে যাওয়া পর্যন্ত অবস্থানকালীন সময়ে তাদের যে কোন সহযোগিতায় প্রশাসন পাশে থাকবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।