অমর একুশে গানের রচয়িতা, সাংবাদিক গাফফার চৌধুরীর প্রয়াণে নিউইয়র্কে নাগরিক স্মরণসভা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সকাল ৭:২৭, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

অমর একুশে গানের রচয়িতা, সাংবাদিক গাফফার চৌধুরীর প্রয়াণে নিউইয়র্কে নাগরিক স্মরণসভা

newsup
প্রকাশিত মে ৩১, ২০২২
অমর একুশে গানের রচয়িতা, সাংবাদিক গাফফার চৌধুরীর প্রয়াণে নিউইয়র্কে নাগরিক স্মরণসভা

ডেস্ক রিপোর্ট : অমর একুশে গানের রচয়িতা, প্রবীণ সাংবাদিক, কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরীর প্রয়াণে নিউইয়র্কে এক স্মরণসভার আয়োজন করে ‘স্কলারস বাংলাদেশ’। জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে ২৮ মে শনিবার এ নাগরিক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং হোস্ট সংগঠনের প্রধান এম ই চৌধুরী শামীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় গাফফার চৌধুরীর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণ করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মুনিরুল ইসলাম, বিটিভি’র সাবেক প্রযোজক, চারণকবি বেলাল বেগ, লেখক-সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা-কন্ঠশিল্পী তাজুল ইমাম, কম্যুনিটি লিডার মোর্শেদ আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী প্রমুখ।

শুরুতে রূপা চৌধুরীর নেতৃত্বে সমবেত কন্ঠে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে-এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে’ পরিবেশিত হয়। এরপর অবিস্মরণীয় সেই ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কী ভুলিতে পারি’ গাইতে গাইতে উপস্থিত সকলে গাফফার চৌধুরীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক গাফফার চৌধুরীর লেখা ৮০/৯০টি কবিতার সংকলন ‘সময়ের ঘড়ি’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ। কবিতার সংকলনটি প্রকাশ করেছেন এম ই চৌধুরী শামীম। তিনি জানান, এটির মোড়ক উম্মোচন করার কথা ছিল গাফফার চৌধুরীর। কিন্তু তার আগেই আমাকে তাকে হারালাম এবং বইটি তার হাতে পৌঁছে দেয়াও সম্ভব হয়নি। অথচ এটি ছিল তার লেখা কবিতার একমাত্র সংকলন।
লেখক-সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকার ছিলেন এবং বহু পরিচয় ছিল আব্দুল গাফফার চৌধুরীর। তার হৃদয় জুড়ে বিরাজ করতো প্রিয় মাতৃভূমি-যা তার লেখনিতে প্রকাশ পেয়েছে।
বিটিভি’র সাবেক প্রযোজক বেলাল বেগ বলেন, আমাদের হৃদয়ে থাকবে একজন চন্ডিদাস, একজন রবীন্দ্রনাথ, একজন নজরুল এবং একজন গাফফার চৌধুরী। তার কারণ হচ্ছে তিনি বাঙালিত্বকে জাগ্রত রাখতে অবিস্মরনীয় একটি কবিতাটি লিখেছিলেন- যা বাঙালি বিশ্বে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।

সাংবাদিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ১৯শে মে লন্ডনের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ই ডিসেম্বর বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে বিএ অনার্স পাস করেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন তিনি। এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তিনি দৈনিক জনপদ বের করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডন যান। এরপরই তার প্রবাস জীবন শুরু হয়। তিনি পাঁচ সন্তানের জনক।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।