পুলিশ সপ্তাহ সমাপ্ত: এ বাহিনী যথার্থই জনগণের বন্ধু হয়ে উঠুক
১০ জানু ২০২৩, ১২:৪৮ অপরাহ্ণ

সম্পাদকীয়: ৩ জানুয়ারি শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহ শেষ হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বার্ষিক প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সদ্য সমাপ্ত পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এ বাহিনীকে সময়োপযোগী হিসাবে গড়ে তুলতে বেশকিছু কাঠামোগত পরিবর্তনসহ একগুচ্ছ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। যৌক্তিক বিবেচনায় এসব দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। দুঃখজনক হলেও সত্য, পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও অনেক সময় পুলিশ নিজেই জড়িয়ে পড়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। বিপদে-আপদে যেখানে মানুষের সবচেয়ে বেশি নির্ভর করার কথা পুলিশের ওপর; দেখা যায়-অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের আচার-ব্যবহার ও কার্যকলাপের মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে পুলিশ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, আমাদের পুলিশ বাহিনী যেন ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে। ব্রিটিশ শাসকরা ওই নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন করেছিল পরাধীন জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে দমিয়ে রেখে নির্বিঘ্নে শাসনকাজ পরিচালনার উদ্দেশ্যে। কিন্তু আজকের দিনের বাস্তবতা ভিন্ন; কারণ, দেশ আজ স্বাধীন। তাই পুলিশকে পুরোনো চিন্তাধারা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।
সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলের পাশাপাশি জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় করোনা সংক্রমণ রোধে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে পুলিশকে আরও জনবান্ধব হতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারেরও করণীয় রয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে যথাযথ সেবা পেতে হলে এ বাহিনীর ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা প্রয়োজন। অস্বীকার করা যাবে না-পুলিশ বাহিনীর নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পর্যাপ্ত যানবাহন নেই তাদের। অনেক ক্ষেত্রে লোকবলেরও সংকট রয়েছে।