খেজুরের রস খাওয়া বিপদ – BANGLANEWSUS.COM
  • ২১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

 

খেজুরের রস খাওয়া বিপদ

newsup
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩
খেজুরের রস খাওয়া বিপদ

বিশেষ প্রতিবেদন: রাজধানীর শনির আখড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহেদ হঠাৎ করে প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ভর্তি হওয়ার আগে সাধারণ জ্বর ভেবে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছিলেন। কিন্তু কিছুতেই জ্বর কমে না। গত ১৯ জানুয়ারি শাহেদ ঢামেকের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। সেখানে এক দিন থাকার পর পরীক্ষা শেষে জানা যায়, নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে শাহেদের শরীরে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।
(আইইডিসিআর)। চলতি বছর এখন পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে ১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আক্রান্তদের মধ্যে সাত জনেরই মৃত্যু হয়েছে, যা গত ৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিপাহ মূলত ভাইরাসঘটিত সংক্রমণ। এই সংক্রমণের কোনও লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে। আবার জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বিভ্রান্তি ইত্যাদি হতে পারে। এক বা দুই দিনের মধ্যে রোগী অচেতন হয়ে পড়তে পারেন। রোগ সেরে যাওয়ার পর মস্তিষ্কে সংক্রমণ ও খিঁচুনি ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে। ভাইরাসে সংক্রমিত পশু ও মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যেমে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগের উপসর্গ থেকে রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে এবং ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা যায়। বাদুড়ের কাছ থেকে দূরে থেকে এবং অপরিশুদ্ধ খেজুর রস পান না করে এই রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১ শতাংশ ব্যক্তি মারা যায়। দেশে ২০০১ সালে মেহেরপুরে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। গত ২২ বছরে দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩২৬ জন, তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩১ জনের। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১০ জন আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। আগের বছর ২০২২ সালে আক্রান্ত হয় তিন জন। মারা যায় দুজন। এর আগে ২০২১ সালে আক্রান্ত দুজন বেঁচে আছেন। তবে আগের বছর ২০২০ সালে আক্রান্ত সাত জনের মধ্যে পাঁচ জনই মারা গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে— উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা। বিশেষ করে মেহেরপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, পাবনা, নাটোর, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারী, মাদারীপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে ইতোমধ্যে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।