ডেস্ক নিউজ: কলকাতা নামটি শুনলেই শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক সমৃদ্ধ নগরীর দৃশ্যপট চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কলকাতা সর্ববৃহৎ শহর ও প্রধান বন্দর হিসেবে বিরাজমান এ মহানগরী ১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল।
পরবর্তী সময়ে এটি অবিভক্ত বাংলা প্রদেশের রাজধানী হয়। লন্ডনের পরই দ্বিতীয় স্থানে অবস্থিত এটাকে ‘সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় নগর’ হিসেবে বিবেচনা করা হত। এর নিজস্ব মার্জিত ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের জন্য কলকাতাকে ‘প্রাসাদ নগরী’ও বলা হত।
বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ১৩৮ কিলোমিটার উত্তর দিকে হুগলি (ভাগীরথী) নদীর বাম (পূর্ব) তীরে অবস্থিত এটি অন্য তিন দিকে থেকে উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার দ্বারা বেষ্টিত।
কলকাতা- চার বর্ণের নামটা মনে এলেই ভেসে ওঠে টানা রিকশা, ট্রামের শব্দ কিংবা হলদে ট্যাক্সি। দীর্ঘদিনের পথচলায় এই শহরটি যেন হয়ে উঠেছে একটি বিশেষ ঐতিহ্যের ধারক।
বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু এই কলকাতা যেন শুধু একটি শহরই নয়, একটি জীবনধারা, একটি আবেগ। আমার বাড়ি খুলনা থেকে কলকাতার দূরত্ব খুব বেশি নয়। এ অঞ্চলের মানুষের একসময় নিত্য যাতায়াত ছিল কলকাতা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মামা বাড়ি ও তার শ্বশুরবাড়ি খুলনাতে হওয়ায় সহজে অনুমেয় খুলনা অঞ্চলের সঙ্গে কলকাতার যোগসূত্র অনেক গভীর। সীমানার কাঁটাতার দু’বাংলার মেলবন্ধনে ছেদ টানলেও জীবিত আছে দু’বাংলার মানুষের আবেগ ও অনুভূতি।
ধর্মতলা হয়ে কলকাতা নিউমার্কেট ঘুরে কলকাতার যাদবপুর এর নাট্যসংগঠন দলমাদল এর সভাপতি সঞ্জয় দাদা এর আতিথিয়েতায় কলকাতায় আকাশবাণী বেতার এর অফিস ও প্রাচীনতম স্টেডিয়াম ইডেন গার্ডেন্স হয়ে গড়ের মাঠ।
এর মধ্যে ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গ দেখার ইচ্ছা থাকলেও তা পূরণ হয়নি সেটি সামরিক স্থাপনা হওয়ায়। গড়ের মাঠ আমার কাছে খুবই পরিচিতি নাম। এখানে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে গড়ের মাঠের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে রওনা হলাম ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর পথে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল প্রাচীন কলকাতায় অবগাহন করে ব্রিটিশদের নিজস্ব স্থাপত্য শৈলী আর রানীর পতি শ্রদ্ধার নিদর্শন। এটি একটি মিউওজিয়াম যেখানে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস সংরক্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
শিল্পসাহিত্যের চর্চার স্থান নন্দন ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিল্ম আর্কাইভ ঘুরে মেট্রোরেলে চড়ে রওনা হলাম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে। মেট্রো থেকে নেমে অটোতে করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুটা সময় অতিক্রম কাটালাম।
কলকাতার ফুটপাত ঢাকা শহরের তুলনায় গোছানো। ট্টাম, ট্টেন ও মেট্রোরেলে জনগণ যাতায়াত করে বেশি। এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী ও সময় বাঁচায়। যেটি আমার কাছে মনে হলো নাগরিক জীবনের গতি আনয়নের উপাদান।
কলকাতা অনেক বড় শহর। হাতে সময় নিয়ে এলে ঘোরার জন্য আছে অনেক জায়গা। পুরোনো কলকাতার গন্ধ নিয়ে মাটির ভাড়ে চা পান করতে করতে ঢুঁ মারা যেতে পারে কলেজ স্ট্রিটে। এশিয়ার সবচেয়ে বড় বইয়ের বাজার এটি।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।