ডেস্ক নিউজ: ২৬৮ বছরের পুরনো ঐতিহ্য ও রাজপরিবারের প্রথা অনুযায়ী শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ ফিরিয়ে নেওয়া হলো দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দিরে। প্রতিবছর এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে মাসব্যাপী মেলা বসে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে হচ্ছে।
কান্তনগর মন্দিরে রাস উৎসবে দেশ-বিদেশের লাখো ভক্ত-পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। তবে এবার করোনাভাইরাসের কারণে তাদের সংখ্যা সীমিত রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্দিরের পূজারী পুলিন চক্রবর্তী।
দিনাজপুর রাজদেবোত্তর এস্টেটের নির্বাহী সদস্য উত্তম কুমার রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবারে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে মেলার আয়োজন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। যাতে করে হয়তো সরকারি রাজস্ব কম হবে। তবে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যগতভাবে ভালো থাকবে। ঈশ্বরের কাছে এবার আমাদের প্রার্থনা যেন দ্রুত এই জীবাণু পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় এবং ঈশ্বর যাতে সবাইকে ভালো রাখে।’
কান্তনগর মন্দিরের পূজারী বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে যাত্রাপথে সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পূজা-অর্চনায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনার পাশাপাশি করোনাভাইরাস থেকে সবাই যেন মুক্ত থাকে এবং দ্রুত বাংলাদেশসহ পৃথিবী থেকে জীবাণুটির বিদায়ের জন্য প্রার্থনা করা হয়।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, দিনাজপুর রাজবংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে কান্তজিউ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে এর কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। তখন থেকেই সাড়ে আট মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং সাড়ে তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে অবস্থান করে কান্তজীউ বিগ্রহ। জন্মাষ্টমীর দুই দিন আগে ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরে নিয়ে আসা হয় কান্তজীউ বিগ্রহ। কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুর ঘাট পর্যন্ত ২৬টি ঘাটে কান্তজীউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকাটি ভেড়ানো হয়। পূজা-অর্চনা শেষে রাজবাড়ির মন্দিরে স্থাপন করা হয় এটি। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন মাস অবস্থান শেষে রাসপূর্ণিমার দুই দিন আগে পুনরায় কান্তনগর মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় কান্তজীউ বিগ্রহ।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।