ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত। দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ধুঁকছে অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধিও নিম্নগামী এবং ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ইসলামাবাদ। রাজনীতিতে প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরানের ক্রমবর্ধমান বিরোধ বাড়ছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে উৎখাত ও হত্যাচেষ্টার নেপথ্যে সেনা কর্মকর্তারা রয়েছেন। পাকিস্তানের এমন পরিস্থিতিতে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ স্থানীয় একজন বিশ্লেষককে বলেছিলেন, পাকিস্তান যদি ব্যর্থ হয় তাহলে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন তাদের সঙ্গে আমাদেরও পতন না হয়।
ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টার থিংক ট্যাংকের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, যখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী রাষ্ট্রীয় ভালো সময়েও অস্থির, গুরুতর রাজনৈতিক চাপান-উতোরে রয়েছে, বড় ধরনের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে, তখন উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।
বিষয়টি এমন নয় যে পাকিস্তানের বিশৃঙ্খলা ভারতে ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু পাকিস্তানে বিশৃঙ্খলার কারণে তারা এমন কিছু গোষ্ঠীর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে, যারা ভারতের জন্য বড় ধরনের হুমকি। যেমন- ভারতকেন্দ্রিক জঙ্গিগোষ্ঠী।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলায় ভারতের জড়িয়ে পড়ার অতীত উদাহরণ রয়েছে। ১৯৭১ সালে ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠিত হয়। ২০০৮ সালে পারভেজ মুশাররফের সামরিক শাসনের অবসান হওয়ার কয়েক মাস পরে ইসলামাবাদ সমর্থিত জঙ্গিরা ভারতের মুম্বাইয়ে হামলা চালায়।
সাম্প্রতিক ইতিহাসের আলোকেও চলমান সংকট ভারতের জন্য আরও উদ্বেগের বলে মনে করছেন পাকিস্তানের এক সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং ওয়াশিংটন ডিসির হাডসন ইনস্টিটিউটের স্কলার হুসেন হাক্কানি। তার মতে, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এমন সময়ে ঘটছে যখন পাকিস্তান সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে এবং দৃশ্যত দেশটির শাসন কাঠামো দুর্বল ও অভ্যন্তরীণভাবে বিভাজিত হয়ে পড়েছে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।