ডেস্ক নিউজঃ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ এনেছে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ব্যাপারে ফেসবুকের শীর্ষ নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গকে ইইউর কার্যালয়ের হাজির হওয়ার নির্দেশও দিয়েছে জোট।
বুধবার ইইউ’র অভ্যন্তরীণ বাজার (ইন্টার্নাল মার্কেট) বিভাগের কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ফেসবুকের মাতৃপ্রতিষ্ঠান মেটার ঠিকানায় পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। চিঠিতে জুকারবার্গকে উদ্দেশ্য করে ব্রেটন বলেছেন, ‘আপানদের (ফিল্টারিং) সিস্টেমগুলো কার্যকর আছে কিনা, নিশ্চিত হতে আমি জরুরি ভিত্তিতে আপনাকে ইইউ কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। বলা বাহুল্য, আমি আরও আশা করছি যে আপনি প্রাসঙ্গিক আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এবং ইউরোপোলের (ইইউর নিজস্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং এই মর্মে নিশ্চয়তা দেবেন যে আমাদের পরবর্তী যেকোনো অনুরোধে আপনি শিগগির সাড়া দেবেন।’
এই যুদ্ধ নিয়ে যেন ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম— অর্থাৎ মেটা প্ল্যাটফরমের কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো প্রকার ভুয়া তথ্য না ছড়ায়, সেজন্য কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশও চিঠিতে দেওয়া হয়েছে।
দুই বছর ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি শেষে ৮ অক্টোবর শনিবার ভোর রাত থেকে দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এবং হামাসের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সূর্যের আলো পুরোপুরি ফোটার আগেই ৩ হাজারেরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছিল ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে।
কাছাকাছি সময়ে মোটরচালিত প্যারা গ্লাইডারে চেপে হামাসের বেশ কয়েকজন যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমাণ্ডের কার্যালয়ে গিয়ে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের বন্দি ও জিম্মি করার পাশাপাশি ওই কমান্ডের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মূল কমান্ড ও অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মোটরসাইকেল ও জীপে করে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন হামাসের আরও কয়েক শ’যোদ্ধা।
গোয়েন্দা তথ্যের তথ্যের ঘাটতি ও পূর্বপ্রস্তুতি না থাকার কারণে হামাসের হামলার পর প্রথম দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিল ইসরায়েল। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই যুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে ফিরে আসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ হচ্ছে আল আকসা অঞ্চলে। ইসরায়েলের সরকার ইতোমধ্যে হামাসকে চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আইডিএফ জানিয়েছে, গত চার দিনে গাজা ভূখণ্ডের অন্তত ২০০ টি ‘লক্ষ্যবস্তু’ ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। রকেট ও বিস্ফোরক ছোড়ার জন্য এসব লক্ষ্যবস্তু ব্যবহার করত হামাস।
শনিবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত যুদ্ধে উভয়পক্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৩০০ জন এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি। নিহত ও আহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী, শিশু ও বেসামরিক লোকজন রয়েছেন।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।