স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই রাজধানীতে অবাধে পশু জবাইয়ে জনস্বাস্থ্যের হুমকি বাড়াচ্ছে

Daily Ajker Sylhet

editorbd

১৪ জুন ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ণ


স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই রাজধানীতে অবাধে পশু জবাইয়ে জনস্বাস্থ্যের হুমকি বাড়াচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট: স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই ঢাকায় অবাধে চলছে পশু জবাই। যদিও প্রতিদিন ঢাকায় কত গরু-ছাগল জবাই হয় সিটি করপোরেশনের কাছে তার হিসাব নেই। তবে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি সংশ্লিষ্টদের মতে, সংখ্যাটি প্রায় দুই হাজার। ঢাকায় মূলত দোকানের বাইরে রাস্তায় এসব পশু জবাই হয়। রাজধানীর ছোট-বড় দুই শতাধিক বাজার ও অলিগলিতে প্রতিদিন এসব পশু জবাই হচ্ছে। আর যত্রতত্র পশু জবাইয়ে রাজধানীতে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করেছে। অথচ পাঁচ বছর ধরে পড়ে আছে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি দুটি পশু জবাইখানায়। তাছাড়া পশু জবাইয়ের সময় থাকেন না কোনো ভেটেরিনারি চিকিৎসক, হয় না পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। সিটি করপোরেশন এবং মাংস ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১-এর ধারা ৩(১) অনুযায়ী, পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়া খোলা স্থানে পশু জবাই নিষেধ। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পাঁচটি জবাইখানার তিনটিই ছয় বছর যাবত বন্ধ। আর যে দুটি চালু আছে তার অবস্থাও নাজুক, সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলে পশু জবাই। অভিযোগ রয়েছে, কসাইরা অনেক সময় মৃত বা অসুস্থ পশু জবাই করে তার মাংস বিক্রি করেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অসুস্থ পশুর মাংস খেলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পশু কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত থাকলে ভোক্তাও তাতে আক্রান্ত হতে পারেন। সেজন্যই জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরি। সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় দুটি পশু জবাইখানা রয়েছে। এর একটি কাপ্তানবাজারে, আরেকটি হাজারীবাগে। এর মধ্যে একটি বন্ধ পাঁচ বছর ধরে, আর আরেকটি এখনো চালুই হয়নি। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তিনটি পশু জবাইখানার মধ্যে একটি নির্মাণের পর চালুই হয়নি। বাকি দুটির অবস্থা নাজুক, সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলে পশু জবাই। সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টদের মতে, দক্ষ জনবলের অভাবে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের পরও হাজারীবাগ পশু জবাইখানা চালু করা যায়নি। পশু জবাইখানাটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দিতে তিন পর্যায়ে ৯ বার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখায়নি। প্রথম দুই দফা ইজারা মূল্য ছিল ৮ কোটি ৫৬ লাখ এবং শেষ দফায় ৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এরপরও কেউ আগ্রহী হয়নি। এখন ইজারা মূল্য আরো কমানোর চিন্তা-ভাবনা চলছে। সূত্র আরো জানায়, ডিএনসিসির তিনটি পশু জবাইখানার মধ্যে ২০১৮ সালে মহাখালী জবাইখানা নির্মাণ হয়। তবে নির্মাণ শেষে এটি চালু হয়নি। আর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এবং মিরপুর-১১ এর জবাইখানায় ডিএনসিসির কোনো ভেটেরিনারি কর্মকর্তা নেই। পশু জবাই হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই। মূলত কসাইরা জবাইখানা ব্যবহারে আগ্রহী না হওয়ায় বিদ্যমান জবাইখানার ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আর ঢাকা শহরে মাত্র পাঁচটি পশু জবাইখানা খুবই অপ্রতুল। এদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলমের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে হাজারীবাগ কসাইখানা চালু করার চেষ্টা করছি; কিন্তু সম্ভব হয়নি। কাপ্তানবাজার কসাইখানা আধুনিকায়নের কাজ চলছে। পরে এটি প্রাইভেট অপারেটরের কাছে লিজ দেওয়া হবে। আর পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় শহরে যত্রতত্র পশু জবাই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সুত্র:এফএনএস ডটকম

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।