ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পেশ করলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিরোধীদের আপত্তিতে তা পাঠানো হলো যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।
১৯৯৫ সালের সংশোধিত ওয়াকফ আইনে ৪০টির মতো সংশোধনী আনতে চেয়েছিল সরকার। বলা হয়েছিল, ওয়াকফ বোর্ড যে অর্থ পাবে তা বিধবা, বিবাহবিচ্ছিন্না নারী ও অনাথদের জন্য খরচ করতে হবে। সরকার যেভাবে সুপারিশ করবে, সেভাবেই তা খরচ করতে হবে। সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার বজায় রাখতে হবে।
প্রস্তাবিত আইনে ওয়াকফ কাউন্সিলে দুইজন নারী ও দুইজন অ-মুসলিমকেও রাখার প্রস্তাব রয়েছে। আওকাফ বোর্ডেও দুইজন নারী, দুইজন অ-মুসলিম, একজন করে শিয়া, সুন্নি, মুসলিমদের মধ্যে অনগ্রসর, বোহরা, আঘাখানি সদস্য থাকবেন। ওয়াকফ ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা যাবে। কেন্দ্রীয় সরকার সিএজিকে দিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের অডিট করাতে পারবে।
এই বিল পেশ করার পরেই কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা অভিযোগ করেন, সরকার এই বিল এনে ধর্মে হস্তক্ষেপ করছে, যা তারা সংবিধান অনুসারে তারা করতে পারে না। কংগ্রেস এমপি কে সি বেনুগোপাল বলেন, এই বিল সরাসরি ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর আঘাত। ওয়াকফ বোর্ডে কেন অ-মুসলিম সদস্য থাকবেন বলেও প্রশ্ন তোলেন বেনুগোপাল।
সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, যখন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা আছে, সেখানে সদস্যদের মনোনীত কেন করা হবে? কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বাইরের মানুষ কেন বোর্ডের সদস্য হবেন? সমাজবাদী পার্টির এমপি মহিববুল্লা বলেন, এটা ধর্মে হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কিছু নয়।
এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে জানান, কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই বিল আনা হয়েছে। তাই বিলটি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানো হোক। এআইএমআইএম নেতা ওয়েইসি বলেন, এই বিল ভারতের সংবিধানবিরোধী ও ভেদাভেদপূর্ণ।
মন্ত্রী কিরণ রিজিজুর দাবি, কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন এই কাজ করা উচিত ছিল। কংগ্রেস করেনি বলে এখন সরকারকে এই কাজ করতে হচ্ছে। আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি। এই বিল আপনারা সমর্থন করুন। কোটি কোটি মানুষ আপনাদের আশীর্বাদ করবে। কিছু মানুষ ওয়াকফ বোর্ড দখল করে নিয়েছে। এই বিল মুসলিম সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষকে ন্যায় দিতে আনা হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত সরকার বিলটিকে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠায়। ফলে এখন যৌথ সংসদীয় কমিটি বিলটি নিয়ে কথা বলবে।
সুত্র: দৈনিক ইনকিলাব
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।