৫৬ সদস্যের নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ, নেতৃত্বে যাঁরা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ২:৫৪, ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

৫৬ সদস্যের নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ, নেতৃত্বে যাঁরা

banglanewsus.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
৫৬ সদস্যের নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ, নেতৃত্বে যাঁরা

অনলাইন ডেস্ক:

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হওয়া সামষ্টিক অভিপ্রায় ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখাসহ আটটি প্রাথমিক কাজ সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

রোববার ( ০৮ সেপ্টেম্বর ) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৫৫ সদস্যের জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে।

নাগরিক কমিটির মুখপাত্র হিসেবে থাকছেন অ্যাকটিভিস্ট সামান্তা শারমিন। আহ্বায়ক রয়েছেন অ্যাকটিভিস্ট ও সংগঠক মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি ওরফে নাসির আব্দুল্লাহ। সদস্যসচিব হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আহনাফ হোসেনের বোন সাইয়েদা আক্তার এ নামগুলো ঘোষণা করেন। বক্তব্য দেন নিহত রায়হান হোসেন সাদ্দামের বোন স্বর্ণা খাতুন।

আহ্বায়ক কমিটির প্রাথমিক কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে— ছাত্র–জনতার ওপর সংঘটিত নির্মম হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা; রাষ্ট্রের জরুরি সংস্কার ও পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ও জবাবদিহির পরিসর তৈরি করা; বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগের সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিময় ও গণমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বস্তরের জনতাকে সংহত করার লক্ষ্যে কাজ করা; দেশের সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সংহত করে গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত করে রাখার লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা; জনস্বার্থের পক্ষে নীতিনির্ধারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা; রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিনির্ধারণী প্রস্তাবনা তৈরি ও সেটা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং গণপরিষদ গঠন করে গণভোটের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরির জন্য গণ–আলোচনার আয়োজন করা।

আহ্বায়ক কমিটির প্রাথমিক কাজ সম্পর্কে মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সরকার গঠিত হলেও পূর্বেকার ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এখনো জনগণের সাফল্যের প্রতিদ্বন্দ্বী রূপে সক্রিয়। নিপীড়ক রাষ্ট্রযন্ত্রের ধ্বংসাবশেষ প্রতি পদে পদে রাষ্ট্রের পুনর্গঠনকে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজপথে নেমে আসা জনতাকে সংগঠিত করা, ৮ আগস্টে গঠিত সরকারকে যুগপৎ সহযোগিতা করা এবং জবাবদিহির আওতায় আনা, তদুপরি জনস্বার্থের পক্ষে নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে আমরা নাগরিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সংহতি ও প্রতিরোধের চেতনা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার শক্তি। এই নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে পূর্ণ বিজয় অর্জন করতে হবে। গণহত্যাকারীদের যথাযথ বিচার, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন, জনস্বার্থের প্রতি সংবেদনশীল নীতি নির্ধারণ নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পূর্বশর্ত।’

সামান্তা বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে কাজ শুরু করছে। অচিরেই সব মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সাথে আমরা আলোচনা করব। তৃণমূল পর্যন্ত এ কমিটির বিস্তৃতি ঘটানোর মাধ্যমে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।’

৫৬ সদস্যবিশিষ্ট এ নাগরিক কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি। এ সময় তিনি বলেন, ‘কোনো দলীয় কর্মকাণ্ড কিংবা কোনো দল নয় এটা। আমরা সকলের, আমরা বাংলাদেশের। ছাত্র–জনতার গণআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা কাজ করে যাব। আজকে প্রাথমিক কমিটি ঘোষণা করছি, পরবর্তী সময়ে এটি বর্ধিত করা হবে।’

কমিটির প্রাথমিক সদস্যরা হলেন—ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, অ্যাকটিভিস্ট সাইফ মোস্তাফিজ, ঢাবির কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস মনিরা শারমিন, অ্যাকটিভিস্ট নাহিদা সারোয়ার চৌধুরী, সারোয়ার তুষার, মুতাসিম বিল্লাহ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, অনিক রায়, জাবেদ রাসিন, মো. নিজাম উদ্দিন, সাবহানাজ রশীদ দিয়া, প্রাঞ্জল কন্তা, মঈনুল ইসলাম তুহিন, আব্দুল্লাহ আল আমিন, হুযাইফা ইবনে ওমর, শ্রবণা শফিক দীপ্তি, সায়ক চাকমা, সানজিদা রহমান তুলি, আবু রায়হান খান, মাহমুদা আলম মিতু, অলিক মৃ, সাগুফতা বুশরা মিশমা, সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ, তাসনিম জারা, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, মো. আজহার উদ্দিন অনিক, মো. মেসবাহ কামাল, আতাউল্লাহ, মশিউর রহমান, এস এম শাহরিয়ার, আতিক মুজাহিদ আইনজীবী মানজুর আল–মতিন, অ্যাকটিভিস্ট তানজিল মাহমুদ, প্রীতম দাশ, তাজনুভা জাবীন, অর্পিতা শ্যামা দেব, আবদুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, এস, এম. সুজা, মাজহারুল ইসলাম ফকির, মো. আরিফুর রাহমান, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মুশফিক উস সালেহীন, তাহসীন রিয়াজ, হাসান আলী খান, মো. আব্দুল আহাদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, কানেতা ইয়া লাম লাম, সৈয়দা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার, আকরাম হুসেইন ও ইউটিউবার সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।