সম্পাদকীয়:
তিন দিনের সফরে গতকাল সকালে ঢাকায় এসেছে পাঁচ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদল। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দফতরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান। এছাড়া দিল্লি সফর শেষে বিকালে এসেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধিদলের এটাই প্রথম ঢাকা সফর। প্রতিনিধিদলটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। জানা গেছে, এ সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দেবে ওয়াশিংটন। এছাড়া দেশের বর্তমান সংকট উত্তরণের চাহিদাগুলো প্রতিনিধিদল জানতে চাইবে। বিষয়গুলোতে সামনের দিকে কিভাবে সহযোগিতা করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হবে।
স্বভাবতই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের এ সফর দুদেশের সম্পর্ক জোরদারে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। সেক্ষেত্রে আলোচনায় বেশকিছু বিষয় নিশ্চয়ই অগ্রাধিকার পাবে। বিশেষ করে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে ঢাকাকে অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুবিধা আদায় করে নিতে হবে। একটি হলো, পোশাক খাতে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল। অপরটি, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা। তাছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনার ব্যাপার রয়েছে। এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। শুধু যে সরকারি পর্যায়েই সম্পর্ক আছে তা নয়, ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে, এদেশের অনেক ছাত্র সেখানে পড়াশোনা করেন, সিভিল সোসাইটির সঙ্গেও সম্পর্ক আছে।
ভুলে গেলে চলবে না, পৃথিবী একটা বহুমাত্রিক কাঠামোর দিকে চলে যাচ্ছে এবং সেখানে একাধিক দেশ উঠে এসেছে। এর মধ্যে যেমন প্রতিবেশী দেশ ভারত রয়েছে, তেমনি আছে চীন, রাশিয়া ও জাপানও। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো এবং বড় ধরনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্কও রয়েছে। ডোনাল্ড লু যেহেতু দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বিষয়াদি দেখভালে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেহেতু এ অঞ্চলের প্রায় সব দেশের নানা বিষয়ে তিনি অবগত থাকেন। কাজেই দরকষাকষির ক্ষেত্রে সুবিধাজনক জায়গায় থাকতে ঢাকাকে কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।