অনলাইন ডেস্ক:
‘ওয়াইল্ড মাদার’ ছদ্মনামে অনলাইনে শিশুদের সুস্বাস্থ্য ও লালনপালনের ওপর ভিডিও তৈরি করেন মার্কিন নাগরিক ডেসরি। কলোরাডোর পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করা এই নারী চান আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতুক। তবে ডেসরির বাড়ি থেকে ৭০ মাইল উত্তরে ডেনভার সিটিতে বসবাসকারী আরেক নারী ক্যামিলি অবশ্য ট্রাম্পকে মোটেই পছন্দ করেন না।
দেড় দশক ধরে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ভোট দিয়ে আসা ক্যামিলি চান, সামনের নির্বাচনে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট যেন হেরে যান। সুতরাং, রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে মার্কিন এই দুই নাগরিকের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক রয়েছে, তা বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, তাঁরা দুজনই মনে করেন, সম্প্রতি ট্রাম্পকে হত্যার যে চেষ্টা হয়েছে, সেটি আসলে সাজানো ছিল!
নির্বাচনে জয়লাভের কৌশল হিসেবে রিপাবলিকান পার্টির এই প্রার্থী নিজেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলেও ধারণা তাঁদের। কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত মতাদর্শের দুজনের মধ্যেই একই রকম ধারণা কীভাবে তৈরি হলো? উত্তরটা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তাঁরা দুজনই বলেছেন, ট্রাম্পের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন সব তথ্য পেয়েছেন, যেগুলো দেখে মনে হয়েছে, হামলার ঘটনা দুটি আসলে সাজানো ছিল।
নির্বাচনের আগে অবশ্য প্রার্থীদের বিষয়ে এমন ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্বে’র বিষয়টি মোটেও নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ধরনের গুজব ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আগেও ছড়াতে দেখা গেছে। ডেসরি ও ক্যামিলির কথার সূত্র ধরে বিবিসি এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে ছড়ানো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বিশেষত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো তথ্যগুলো খতিয়ে দেখেছে।
এ ক্ষেত্রে এক্সে এমন বহু পোস্ট বিবিসি খুঁজে পেয়েছে, যেখানে কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই বলা হচ্ছে, ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা দুটি পুরোপুরি সাজানো ছিল। ওই সব পোস্টে লাখ লাখ ভিউ দেখা যাচ্ছে, অনেকে শেয়ারও দিচ্ছেন। এর অনেকগুলোই ছড়ানো হয়েছে ট্রাম্পবিরোধীদের অ্যাকাউন্ট থেকে। এর মধ্যে বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে, যেগুলো দেখে মনে হয়েছে, তাঁরা আগে খুব একটা ভুয়া খবর ছড়াননি। তবে নিয়মিতভাবে ভুয়া খবর ছড়ান, এমন অ্যাকাউন্টও দেখা গেছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এসব গুজব ছড়ানো রোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মালিকানায় থাকা কোম্পানিগুলো কী করছে? তারা সব সময়ই দাবি করে আসছে, ভুয়া ও ক্ষতিকর কনটেন্ট কমানোর পাশাপাশি ব্যবহারকারীর সুরক্ষায় তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা ও গাইডলাইন রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেগুলো কতটা কাজে আসছে? বিষয়টি নিয়ে বিবিসির পক্ষ থেকে এক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি।
মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে দুবার হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে প্রথমবার হত্যাচেষ্টা হয়েছিল গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। তখন পেনসিলভানিয়ায় এক সমাবেশে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি বেঁচে গেলেও হামলাকারীর গুলিতে অন্য এক ব্যক্তি নিহত হন। এ ছাড়া দুজন গুরুতর আহত হন। হামলার পর হামলাকারীর নাম প্রকাশ করে তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই। বলা হয় তাঁর নাম থমাস ম্যাথিউ, যাঁর বয়স মাত্র ২০ বছর।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।