জাপানে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণে কমেছে – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৮:০০, ২২শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

জাপানে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণে কমেছে

newsuk
প্রকাশিত জুন ৫, ২০২৫
জাপানে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণে কমেছে

ডেস্ক রিপোর্ট :  জাপানে শিশু জন্মের হার আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে নতুন শিশুর জন্ম ৭ লাখের নিচে নেমে এসেছে, যা বিগত ১২৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। জন্মহার হ্রাসের এই ধারা কেবল জনসংখ্যার ভারসাম্যে নয়, অর্থনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা একে ‘শান্ত অথচ বিপজ্জনক সংকেত’ হিসেবে দেখছেন। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার (৪ জুন) জানায়, ২০২৪ সালে দেশটিতে মাত্র ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬১ শিশুর জন্ম হয়েছে। যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৫.৭ শতাংশ কম। এই সংখ্যা ১৮৯৯ সালের পর প্রথমবার ৭ লাখের নিচে নামল। ১৮৯৯ সাল থেকে দেশটি শিশু জন্মের তথ্য সংরক্ষণ শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে জাপানে সর্বোচ্চ প্রায় ২৭ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছিল। সেই তুলনায় বর্তমান সংখ্যা চার ভাগের এক ভাগেরও কম। বিগত ১৬ বছর ধরেই দেশটিতে জন্মহার ধারাবাহিকভাবে কমছে।

জাপানে জন্মহার কমার পেছনে অনেকগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ কাজ করছে। দেশটির তরুণ প্রজন্ম বিয়ে ও সন্তান নেওয়ার বিষয়ে দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছে। জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়, ভালো চাকরির অভাব এবং কর্পোরেট দুনিয়ায় কঠিন কর্মসংস্কৃতি—সবমিলিয়ে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটি স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলার ইচ্ছা কমে যাচ্ছে। তাছাড়া, লিঙ্গবৈষম্যমূলক কাজের পরিবেশ এবং নারীদের পেশাগত জীবনে সন্তানের যত্ন নেওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় অনেকেই মা হতে চান না। প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই পরিস্থিতিকে “নীরব জরুরি অবস্থা” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সরকার এমন একটি পরিবেশ তৈরি করবে যেখানে দম্পতিরা কাজ এবং পরিবার—দুইই সামলাতে পারবেন। এরই মধ্যে পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও জন্মহার কমে যাচ্ছে। ভিয়েতনাম তো ইতোমধ্যে দুই-শিশু নীতি বাতিল করেছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির আশায়। তবে এই সংকটের মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক হলো—গত বছর জাপানে বিয়ের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে; ২০২৪ সালে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩টি বিয়ের রেকর্ড হয়েছে। জাপানের জন্মহার সংকট শুধু দেশটির জনসংখ্যার কাঠামোকেই বদলে দিচ্ছে না, বরং ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক কাঠামোকেও অনিশ্চিত করে তুলছে। শিশুদের অভাবে পরবর্তী প্রজন্মের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে যাবে, যা বার্ধক্যজনিত চাপ আরও বাড়াবে। তাই এখনই প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং তরুণদের জন্য এমন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ তৈরি, যেখানে তারা পরিবার গড়তে উৎসাহ বোধ করবেন। সরকার ও সমাজের যৌথ প্রচেষ্টাই পারে এই নীরব সংকট কাটিয়ে উঠতে।

Desk: K

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।