প্রধানমন্ত্রীর ডাকের অপেক্ষায় সুলতান মনসুর - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সকাল ৯:৫৭, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

প্রধানমন্ত্রীর ডাকের অপেক্ষায় সুলতান মনসুর

প্রকাশিত জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রীর ডাকের অপেক্ষায় সুলতান মনসুর

 

ডেস্ক রিপোর্ট :  আওয়ামী লীগে ফিরছেন একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে জয়ী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মো. মনসুর আহমেদ। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাক পেলে যেকোন দিন তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘরে ফেরা’র ঘোষণা দিতে পারেন তিনি। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগে ফিরছেন। পুরনো ঘরে ফিরে শিগগিরই রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন তিনি। আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের প্যানেলকে বিজয়ী করতে সাবেক এই ভিপিকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

জানতে চাইলে সুলতান মো. মনসুর আহমেদ বলেন, আমি তো ছাত্রলীগের প্যানেল থেকেই ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নেতা বানিয়েছেন। ছাত্রলীগের প্যানেলকে নির্বাচিত করার কোনো দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব এলে তা অবশ্যই গ্রহণ করবো।

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো আওয়ামী লীগ ছাড়িনি। আওয়ামী লীগ আমাকে বহিষ্কারও করেনি। সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি ভবিষ্যতে দেখা যাবে।

সুলতান মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার নেত্রী। আমার শেষ ঠিকানা বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা। এখানে কোনো আপস নেই।

তিনি বলেন, আমিও নেত্রী সম্পর্কে কোনো দিন কোনো কটু কথা বলিনি, নেত্রীও আমার নাম উচ্চারণ করে আমার সম্পর্কে কোনো দিন কটু কিছু বলেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ২০০৯ সালের সম্মেলনে বাদ পড়েন দলীয় পদ থেকে। সেনাসমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দলে এ অবস্থা হয় তার। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়।

সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার বিষয়ে সুলতান মো. মনসুর আহমেদ বলেন, ‘শপথের বিষয়ে আমি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করি। হয়তো শপথ নেব। কারণ আমি আমার নির্বাচনী আসনের ভোটারদের অসম্মান করতে পারি না। শপথ কবে নিতে পারেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দাওয়াতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুলতান মনসুর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত গ্রহণ করে গণভবনে যাওয়া উচিত।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করায় জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুলতান মনসুর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলে বিএনপি তার সদস্য পদ বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিলে তার সদস্য পদ থাকবে না।

তবে এ বিষয়ে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলছেন, সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে তারা এখনও অটল। তিনি বলেন, সুলতান মো. মনুসর আহমেদ গণফোরামের প্রেসিডিয়ামের সদস্য, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য। সেভাবেই নির্বাচন হয়েছে। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে ঐক্যফ্রন্টের সমর্থনে নির্বাচন করেছেন। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে সংসদে না যাওয়ার, শপথ না নেওয়ার।

এবারের নির্বাচনে ২৫৭টি আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করেছে। অন্যদিকে বিএনপিকে নিয়ে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র আটটি আসন।

ভরাডুবির এই ভোটে বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বগুড়া-৪ আসনে মোশারফ হোসেন, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে হারুনুর রশিদ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আব্দুস সাত্তার ভূঞা জয়ী হতে পেরেছেন।

৩০ ডিসেম্বর ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে ঐক্যফ্রন্ট নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাতে সাড়া দেয়নি, বিএনপির নির্বাচিতরাও আর শপথ নেননি।

সরকার গঠনের পর শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে বিভেদ ভুলে ‘জাতীয় ঐক্যের’ আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংখ্যায় ‘কম হলেও’ বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ নিয়ে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রস্তাব ও সমালোচনার ‘যথাযথ মূল্যায়ন’ করা হবে।

কিন্তু ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই মুহূর্তে সংসদে যাওয়ার বা শপথ নেওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না।

আগামী ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি থেকে একাদশ সংসদের যাত্রা শুরু হবে। নিয়ম অনুযায়ী, তার পরের ৯০ দিনের মধ্যে কেউ শপথ নিয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর না করলে তার আসন শূন্য ঘোষণা করে সেখানে উপ-নির্বাচন দেওয়া হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।