জাতিসংঘে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষাসমূহের আন্তর্জাতিক বর্ষের বৈশ্বিক উদ্যাপন উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের সভা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ২:২৫, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

জাতিসংঘে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষাসমূহের আন্তর্জাতিক বর্ষের বৈশ্বিক উদ্যাপন উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের সভা

প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
জাতিসংঘে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষাসমূহের আন্তর্জাতিক বর্ষের বৈশ্বিক উদ্যাপন উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের সভা

হাকিকুল ইসলাম খোকন,নিউইয়র্ক :: গত ০১ ফেব্রুয়ারি “আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের দাবীতে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মাতৃভাষার প্রতি বিশ্বব্যাপী মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রসমূহ সংরক্ষণে বাংলাদেশের যে অটল প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা উৎসারিত হয়েছে ভাষা শহীদদের মহান আত্মত্যাগ থেকেই। আর বাংলাদেশের উদ্যোগের কারণেই ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে” -আজ ‘ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষাসমূহের আন্তর্জাতিক বর্ষের বৈশ্বিক উদযাপন’ উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের প্লেনারি সভায় বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

“এটা আনন্দের বিষয় যে এবছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ও ‘২০১৯-ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষার আন্তর্জাতিক বর্ষ’ একসাথেই উযাপন করা হচ্ছে। উভয় উদযাপনই ভাষার সাথে সংশ্লিষ্ট। এই ভাষা ও সংস্কৃতি হচ্ছে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়টিকে সমুন্নত রাখার নির্ণায়ক। আর এবছরই বাংলাদেশ আনীত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গ্রহণের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে। সবমিলিয়ে ভাষা, সংস্কৃতি ও শান্তির মেলবন্ধনে অর্জিত আমাদের ‘একতা’কেই আমরা যেন মহাসমারোহে উদযাপন করতে যাচ্ছি” -বলেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

স্থায়ী প্রতিনিধি দেশে শান্তি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ’ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা আমাদের নিজস্ব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর স্বতন্ত্র পরিচয়, ভাষা, সংস্কৃতি, ভূমি ও সম্পদ সংরক্ষণে কাজ করছি। আমাদের সকল জাতীয় নীতি, কর্মসূচি ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় তাদের অধিকার সংরক্ষণ করেছি যার স্বীকৃতি স্বরূপ ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদান করেছে সম্মানজনক ‘কালচালার ডাইভারসিটি’ পুরস্কার”।

এ প্রসঙ্গে উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমরা পাহাড়ি জেলাসমূহে তিনটিসহ মোট সাতটি বিশেষায়িত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি যা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সকল উপজাতীয় সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য ও ভাষার প্রসার ও সংরক্ষণে কাজ করছে। আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভাষার সংরক্ষণ গবেষণা ও এ সংক্রান্ত মেধাভিত্তিক কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছে। আমরা বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীদের নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাঁচটি নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। এসকল অঞ্চলে প্রায় ১৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদান করছে।

সকাল ১০টায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনের সভাপতি মিজ্ মারিয়া ফার্নান্দা এসপিনোসা গার্সেজ এ অনুষ্ঠানের শুধু সূচনা করেন এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কী-নোট স্পীচ প্রদান করেন বলিভিয়ার রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল লিউ জেনমিন, ইউনেস্কোর সংস্কৃতি বিষয়ক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আর্নেষ্টো অটোনি রামিরেজ এবং ‘স্থানীয় ভাষার আন্তর্জাতিক বর্ষ’ উদযাপনের স্টিয়ারিং কমিটির চারজন কো-চেয়ার।

অনুষ্ঠানটিতে কানাডার নর্দান ভ্যাঙ্কুভার আইল্যান্ডের কোকোয়াকা ভাষাভাষী জনগণ তাদের ঔতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন। কানাডার ও ইকুয়েডরের মন্ত্রীদ্বয় এ সভায় বক্তব্য রাখেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।