রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে একটি স্পস্ট রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৯:৫৪, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে একটি স্পস্ট রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন

sub editor
প্রকাশিত জুন ২০, ২০২১
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে একটি স্পস্ট রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন

নিউইয়র্ক: “মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি; তবে এই সঙ্কটটির সমাধান নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপর, যা গত চার বছরে সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক” -১৬ জুন বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস. বার্গনার এর সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে একথা বলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।

কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘসময় ধরে অবস্থানের নেতিবাচক দিক বিশেষ করে ঐ এলাকায় বসবাসরত মূল জনগোষ্ঠীর উপর এর বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতিসত্ত্বর যদি প্রত্যাবাসন শুরু না হয় তাহলে এটি কেবল এই এলাকারই সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এতদাঞ্চল ও এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করবে। বিশেষ দূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাষাণচর প্রকল্পের কথা অবহিত করেন এবং বলেন এখানে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জাতিসংঘ যাতে ভাষাণচরে মানবিক সহায়তা প্রদান করে সে বিষয়তি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিশেষ দূতকে ভাষাণচর পরিদর্শনে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
মিয়ানমারে যাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং অচিরেই যাতে প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করা যায় সেজন্য জাতিসংঘ সদস্যরাষ্ট্রসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন ও বাইরের সকল অংশীজনদের সাথে বিশেষ দূত যোগাযোগ ও আলোচনা অব্যাহত রেখেছে মর্মে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এছাড়া ভাষাণচর পরিদর্শন করতে বিশেষ দূত তার আগ্রহের কথা জানান।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রুয়া এর সাথে ভার্চুয়াল এক বৈঠক মিলিত হন। এসময় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি পূনর্ব্যক্ত করেন তিনি। শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগকে ধন্যবাদ জানান তিনি। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষী বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীগণের ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে অনুরোধ জানান যেন পিস অপারেশন বিভাগ নারী শান্তিরক্ষীগণকে আরও উৎসাহিত করতে বিশেষ ডকুমেন্টারিসহ অন্যান্য প্রচার সামগ্রী প্রস্তুত করে। এছাড়া জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের পিস কিপিং সংশ্লিষ্ট উচ্চ পদসমূহে আরও বেশি বাংলাদেশী সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
সূদীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ অংশগ্রহণ ও সাফল্যমন্ডিত অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন জনাব ল্যাক্রুয়া। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। শান্তিরক্ষা মিশনসমূহে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেন জনাব ল্যাক্রুয়া।
উভয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।