নিউজ ডেস্কঃ
পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এবারের ঈদুল আজহার পূর্বের চিরচেনা অনেক আনন্দ করোনার ডেলটা ভেরিয়েন্টর আঘাতে নিরানন্দ হয়ে ঠেকেছে।
প্রথমত পর্তুগালে উচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি অভাবে রাজধানী লিসবনে খোলা আকাশের নিচে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিচালনাধীন রাজধানী লিসবনের বায়তুল মোকাররম ইসলামিক সেন্টার জামে মসজিদে ৬ টি, মার্তিম মুনিজ জামে মসজিদে ৪ টি জামাত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে একাধিক জামাত বাড়ানো হয়েছে। লিসবন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ২ টি এবং আয়েশা সিদ্দিকা মসজিদ অধিভেলাসে ৩ টি, কাসকাইসে ১ টি ঈদুল আজহার নামাজের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বন্দরনগরী পর্তোতে হযরত হামজা (রা.) মসজিদে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিট এবং সকাল ৮ টা ৩০ মিনিট দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় হযরত বেলাল (র.) মসজিদে সকাল ৬টা ৪০ এবং সকাল ৮ টা পর্যন্ত তিনটি ঈদুল আজহার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খোলা মাঠে নামাজ আদায় করতে না পারলেও মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আল্লাহ তায়ালার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। নামাজ শেষে মুনাজাতপর্বে মুসলিম উম্মার শান্তি কামনাসহ মহামারি থেকে মুক্তিতে আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়েছে সব মসজিদেই।
পর্তুগালের প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও বিশ্বের ৫০ টিরও বেশি দেশের মুসলিম উম্মার ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
পর্তো বাংলাদেশ কমিউনিটির সভাপতি জনাব শাহ আলম কাজল জানান, অনেক লোক করোনা আক্রান্ত থাকায় আমরা দুটি জামাত করতে সক্ষম হয়েছি। যাদের করোনার উপসর্গ ছিল তাদেরকে জামাতে শরিক হওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। নয়ত আরো মুসল্লির জমায়েত হতো।
সার্থকভাবে ঈদ জামাত পরিচালনা করার জন্য প্রবাসী মুসলিমদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এবং পর্তুগাল ও বাংলাদেশের সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শেষ দিকে পর্তুগালে বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা সম্প্রতি করোনায় ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। প্রায় ১৫০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়েছেন এবং এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফলে সবার মাঝে একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
বিভিন্ন পরিবার করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ঈদের দিন একে অন্যের বাসায় নিমন্ত্রণেও যাননি তেমন। অনেক পরিবার আইসোলেশনের মত ঈদ পালন করেছেন। অন্যের বাসায় যাওয়া থেকে বিরত থাকছেন।
তবে যে সব পরিবারে করোনাক্রান্ত রোগী রয়েছে তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয়ভাবে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবারগুলো এগিয়ে এসেছেন। যা ঈদের মহাত্মতা প্রকাশ করেছে।
ঈদ জামাত ও পরবর্তী বাংলাদেশি হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে মিষ্টিমুখ করার জন্য প্রবাসীদের ভিড় লক্ষ করা যায়নি এবারও।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় লোকজনের উপস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থার থেকে অনেক কম ছিল।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।