ডেস্ক রিপোর্ট : টিপ নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেয়ায় সিলেট জেলা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) পুলিশ হেড কোয়ার্টারের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জনস্বার্থে’ বদলি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেয়ায় সোমবার লিয়াতক আলীকে ক্লোজ করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ফরিদ উদ্দিন। সেই সঙ্গে স্ট্যাটাসের বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় এবং স্ট্যাটাসের বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরকে অবহিত করা হয়।
লিয়াকত আলী সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সোমবার তাকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
টিপ পরায় কলেজ শিক্ষককে এক পুলিশ সদস্যের হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে দেশজুড়ে যখন তোলপাড়, তখন পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকতের ওই ফেসবুক স্ট্যাটাস সমালোচনার সৃষ্টি করে।
কলেজশিক্ষককে হয়রানির পর ফেসবুকজুড়ে নারীদের পাশাপাশি অনেক পুরুষও কপালে টিপ পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন লিয়াকত। যদিও পরে তিনি সেটি মুছে দেন।
তার আগেই সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে, চলছে সমালোচনা।
তিনি সোমবার ওই স্ট্যাটাসে লিখেছেন (মূল পোস্টের বানান অপরিবর্তিত), ‘টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানীর করার প্রতিবাদে অনেক পুরুষ নিজেরাই কপালে টিপ লাগাইয়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু আমি ভবিষ্যত ভাবনায় শংকিত। বিভিন্ন শহরে অনেক নারীরা যেসব খোলামেলা পোষাক পড়ে চলাফেরা করেন – তারমধ্যে অনেকেরই ব্রায়ের উপরে দিকে প্রায় অর্ধেক আনকভার থাকে। পাতলা কাপড়ের কারনে বাকী অর্ধেকও দৃশ্যমান থাকে। এখন যদি কোনো পুরুষ এইভাবে ব্রা পড়ার কারনে কোনো নারীকে হয়রানী করে তবে কি তখনও আজকে কপালে টিপ লাগানো প্রতিবাদকারী পুরুষগণ একইভাবে ব্রা পড়ে প্রতিবাদ করবেন???’
এই স্ট্যাটাসের ব্যাপারে জানতে চাইলে সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ওই স্ট্যাটাস আমি ডিলিট করে দিয়েছি। যেটা ডিলিট করে দিয়েছি, যেটার অস্তিত্বই নাই, সেটা নিয়ে আমি কথা বলব না।
‘পুরুষ হয়ে টিপ পরে প্রতিবাদ জানানোর ভাষাটা আমার কাছে সঠিক মনে হয়নি। সেটা নিয়ে লিখেছি।’
স্ট্যাটাস কেন ডিলিট করেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে লিয়াকত বলেন, ‘আমার ভালো লাগছিল তাই দিয়েছিলাম। পরে ভালো লাগে নাই, তাই সরিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া ওটা আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। প্রাতিষ্ঠানিক কিছু না।’
টিপ পরায় গত শনিবার রাজধানীতে হেনস্তার শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে সোমবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।