আসামে বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘মিঞাঁ মিউজিয়াম’ বন্ধ করে দিল সরকার - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৪:০৯, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

আসামে বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘মিঞাঁ মিউজিয়াম’ বন্ধ করে দিল সরকার

newsup
প্রকাশিত অক্টোবর ২৭, ২০২২
আসামে বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘মিঞাঁ মিউজিয়াম’ বন্ধ করে দিল সরকার

ভারত প্রতিনিধি: ভারতের আসামে বাংলাভাষী মুসলমানদের একটি সংগ্রহশালা বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্যটির সরকার। মাত্র দু’দিন আগে খোলা হয়েছিল ‘মিঞাঁ মিউজিয়াম’ নামে ওই সংগ্রহশালাটি।
সরকার দাবি করেছে, সরকারি প্রকল্পে বাসস্থানের জন্য দেওয়া একটি বাড়িতে ওই মিউজিয়াম গড়ে তোলা হয়েছিল। আর তাই সংগ্রহশালাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং তিনজন উদ্যোক্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে বাংলাভাষী মুসলমানরা বলছেন, তাদের জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে রাজনীতি করার জন্যই ওই মিউজিয়ামটি গড়া হয়েছিল।

আসামের মিঞাঁ কারা?
গোয়ালপাড়ার ‘মিঞাঁ মিউজিয়াম’ নিয়ে আসামের রাজনীতি এখন সরগরম। ডাপকারভিটা গ্রামের একতলা বাড়িটি মোহর আলির। সেখানেই চালু হয়েছিল ওই মিউজিয়ামটি।

পূর্ব বাংলার বিভিন্ন জেলা, বিশেষ করে ময়মনসিংহ, রংপুর ইত্যাদি অঞ্চল থেকে যে বাংলাভাষী মুসলমান কৃষকরা আসামে বসতি গড়েছিলেন সেই ব্রিটিশ আমল থেকে, তাদের মিঞাঁ বলে ডাকে আসামের একটা বড় অংশের মানুষ।

মিঞাঁ কবি ফারহাদ ভুঁইঞ্যা বলছেন, ‘মিঞাঁটা কোনো কমিউনিটি না। পূর্ববঙ্গ থেকে আসা বাংলাভাষী মুসলমানদেরই তাচ্ছিল্য করে মিঞাঁ বলে আসামের মানুষ। বহু বছর ধরেই এটা চলে আসছে। তার ফলে আমাদের মধ্যেও একটা অংশ এখন নিজেদের মিঞাঁ বলে ভাবতে শুরু করেছে।’

কী কী ছিল ‘মিঞাঁ মিউজিয়ামে’?
ওই মিউজিয়ামে লাঙল, হাল, মাছ ধরার সরঞ্জাম, গামছা, লুঙ্গি ইত্যাদি যেসব দ্রব্য মূলত বাংলাভাষী মুসলমান কৃষকরা ব্যবহার করেন, সেগুলোই প্রদর্শিত হয়েছিল। কিন্তু বাড়িটি যেহেতু প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস প্রকল্পের অধীনে দেওয়া হয়েছিল, তাই সেই বাড়ি বসবাস করা ছাড়া অন্য কাজে ব্যবহার করা যায় না, এই যুক্তি দেখিয়ে সরকার মিউজিয়ামটি বন্ধ করে দিয়েছে।
এই কারণ উল্লেখ করে গোয়ালপাড়ার ডেপুটি কমিশনারের একটি লিখিত নির্দেশ মিউজিয়ামের দরজায় আটকিয়ে ভবনটি সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন।

কেন মিঞাঁ মিউজিয়াম: প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
তবে মিঞাঁ মিউজিয়ামটির আদৌ কি প্রয়োজন ছিল? প্রশ্ন তুলেছেন খোদ আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।

হিমন্ত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘লাঙ্গলটি শুধু মিঞাঁরা ব্যবহার করে? অসমীয়া মানুষও তো লাঙ্গল ব্যবহার করে। মাছ ধরার যে সরঞ্জামটা রাখা হয়েছে, সেটাও তো তপশীলী জাতির মানুষ ব্যবহার করে! গামুসাও ছিল দেখা গেছে – সেটা তো আসামের গামছা। শুধুমাত্র লুঙ্গিটাই ওরা ছাড়া আর কেউ ব্যবহার করে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘সরকারের কাছে তারা এটা প্রমাণ করুক যে লাঙল শুধুমাত্র মিঞাঁরাই ব্যবহার করে, অসমীয়ারা করে না। অসমীয়াদের ব্যবহার্য জিনিষপত্র নিয়ে গিয়ে মিঞাঁ মিউজিয়াম খুলেছে!’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।