পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তৎপর আ.লীগ-বিএনপি

Daily Ajker Sylhet

newsup

০১ ডিসে ২০২২, ০১:০২ অপরাহ্ণ


পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তৎপর আ.লীগ-বিএনপি

বিশেষ প্রতিনিধি: ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি দেওয়া হলেও নয়া পল্টনেই সমাবেশ আয়োজনে অনড় বিএনপি। দুই পক্ষের এই অটল অবস্থানের কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা তৈরি হলেও আদতে অনেকটাই শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রাখার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত একাধিক পক্ষের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়টি উঠে আসে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, সরকারি দলও বিএনপির আন্দোলন ইস্যুতে কিছুটা নমনীয়। বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার স্বার্থে সরকারি দল নিজেদের একটি পূর্বঘোষিত কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করেছে। দলটি ওই দিন রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে নয়া পল্টনেই সমাবেশ করার অনুমতি পাবে বিএনপি। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) ডিএমপির পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও বিএনপির এতে সায় নেই। বিশেষত যে ২৬টি শর্তে বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেসব শর্ত মানা হলে সমাবেশ করারই সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
সরকারি দলের সূত্রগুলো জানিয়েছে, কাগুজে শর্ত কঠিন হলেও বাস্তবে ততটা কড়াকড়ি আরোপ করা হবে না। বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চাইলে সেটা নির্বিঘ্নে করতে পারবে। তবে সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনও বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে।

বাংলা ট্রিবিউনকে আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর ইস্যুতে বিএনপি তার কঠোর অবস্থান পরিবর্তন করার কারণে সরকারও তার কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। এজন্য আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন দুদিন এগিয়ে আনা হয়েছে।

রাজধানীর বাইরে অনুষ্ঠিত বিএনপির সব জনসভাকে কেন্দ্র করে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক এলেও ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে কেউ যেন পরিবহন ধর্মঘট ডাকতে না পারে সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন নেতারা। অবশ্য দলীয়ভাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ দলের সহযোগী সংগঠন ওইদিন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কার্যালয়ে সতর্ক থাকবে।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি থাকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ডিসেম্বর মাসব্যাপী রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থানে থাকবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ও ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া ৬ ও ৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে। ১৫ ডিসেম্বর হবে সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের জাতীয় সম্মেলন। এছাড়া ২৪ ডিসেম্বর হবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন।

আওয়ামী লীগ ১০ ডিসেম্বর সতর্ক পাহারায় থাকবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সচিবালয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, পার্টি অফিসে সমাবেশ করার জন্য বিএনপির এত দৃঢ়তা কেন? এখানে তাদের কি কোনও বদ উদ্দেশ্য আছে? কোন মতলবে তারা এটা চায়? সমাবেশকে ঘিরে আন্দোলনের নামে সহিংসতা হলে সমুচিত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে কাদের বলেন, আমরা বাধা দিতে চাই না। বিএনপি সমাবেশ করুক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে—এটাই আমরা চাই।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।