বিশেষ প্রতিবেদন: চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই হিসাবে নির্বাচনের বাকি ৮ থেকে ৯ মাস। তবে এখনও নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না সেভাবে। বিরোধীদের আন্দোলন আর তা মোকাবিলায় ক্ষমতাসীনদের ব্যস্ত থাকাই দৃশ্যমান হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাল্টাপাল্টি এসব কর্মসূচির নেপথ্যে ভোটের প্রস্তুতিও চলছে উভয় শিবিরে। মাঠ দখলে রাখার রাজনীতির পাশাপাশি নির্বাচনি আমেজ তৈরির চেষ্টায়ও নেমেছে আওয়ামী লীগ।
দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অন্তত চার নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, নির্বাচনের এক বছরেরও কম সময় বাকি আছে। কিন্তু বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকায় সেভাবে নির্বাচনি হাওয়া এখনও তৈরি হয়নি। সে জন্য আন্দোলন মোকাবিলার পাশাপাশি নির্বাচনি আমেজ তৈরি করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ, যাতে বিএনপির চলমান আন্দোলনের ওপর পরোক্ষভাবে এবং দলটির নেতাকর্মীদের ওপর মনস্তাত্বিক চাপ সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি নির্বচনমুখী দল। স্বাভাবিকভাবেই আমরা নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছি। শিগগিরই দেশে নির্বাচনি আমেজ তৈরি হবে। বিএনপিও নির্বাচনে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তারাও ভোটের প্রস্তুতি নেবে, এটাই স্বাভাবিক।
আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সম্পাদক ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপি বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচনে যাবে না বললেও ভেতরে ভেতরে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে জন্য তারা কর্মসূচি রাজধানী থেকে প্রথমে মহানগরে এবং পরে জেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এর পেছনে দলটির উদ্দেশ্য হলো, পরিস্থিতি বুঝে যাতে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে যেতে পারে।
তারা বলছেন, বিএনপির এই চালাকি পরিষ্কার ধরতে পেরেছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। সে কারণে কেবল রাজধানীর দুই অংশে শান্তি সমাবেশ না করে প্রথমে মহানগর এবং পরে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচিকে অনেকে বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে দেখছে। তবে ভেতরে আরও একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, আর তা হলো নির্বাচনি তৎপরতা।
নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতির বিষয়টি গত শনিবারের (৪ মার্চ) কর্মসূচিতে অনেকটা দৃশ্যমান হয়েছে বলা যায়। এদিন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ১১টি সংসদীয় আসনে ‘শান্তি সমাবেশ’ করে আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ শাখা। এতে অংশ নিয়ে দলটির কেন্দ্রীয় ও নগর নেতারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পাশাপাশি ‘বিএনপির সম্ভাব্য দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সতর্ক থাকার’ নির্দেশ দেন নেতারা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।