সম্পাদকীয়:
২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস I বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় অবদান রাখা সব ফার্মাসিস্টের প্রতি শুভেচ্ছা I বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন কর্তৃক ২০০৯ সালে চালু হওয়া এই দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য— ফার্মাসিস্ট : বৈশ্বিক স্বাস্থ্য চাহিদা পূরণে I
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯, এমপক্স, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সসহ জটিল স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ I আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিবেচনা করলে একজন ফার্মাসিস্ট বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখতে পারে, যার মধ্যে —
ক) ওষুধের ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়াদি দেখভাল করা
খ) কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগীর সেবা প্রদান
গ) জনস্বাস্থ্য উন্নতিকল্পে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ
ঘ) অতিসহজে ও দ্রুত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিতকরণ
ঙ) এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স রোধকল্পে ভূমিকা রাখা
চ) দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ওষুধনীতির বিষয়ে অবদান রাখা উল্লেখযোগ্য I
সমন্বিত স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ফার্মাসিস্টদের অবদানকে স্মরণীয় করার জন্যই এই দিবস যা একসঙ্গে বিশ্বের ১৯৩ দেশে পালিত হয়ে থাকে I প্রসঙ্গত, PHARMACIST শব্দটিকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করলে দাঁড়ায়— P=Patience (ধৈর্য), H=Honesty (সততা), A=Alertness (সতর্কতা), R=Research (গবেষণা), M=Motivator (প্রেরণাদানকারী), A=Administrator (প্রশাসক), C=Courageous (সাহসী), I=Intelligent (বুদ্ধিমান), S=Studious (পড়ুয়া), T=Thinker (চিন্তাশীল) I আমেরিকান ফার্মেসি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, ফার্মাসিস্টরা ওষুধের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত হয়। ফার্মাসিস্টরা স্বাস্থ্যসেবাকাজে অংশগ্রহণ করলে ওষুধের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়, অতিসহজে ও দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যয় কমে আসে I সাম্প্রতিক সময়ে উন্নত বিশ্বে ফার্মেসি অনুশীলন ক্রমবর্ধমানভাবে ডিসপেন্সিং হতে রোগীদের কাউন্সেলিংয়ের দিকে মোড় নিচ্ছে, যা রোগীকেন্দ্রিক সমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে I
যাই হোক, এবার আসা যাক বাংলাদেশ প্রসঙ্গে I বাংলাদেশে ফার্মেসি পেশার ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল I সমন্বিত স্বাস্থ্যব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশীজন এই পেশাজীবীরা (ফার্মাসিস্ট) সামগ্রিকভাবে বেশ সফল ও অগ্রসরমান মনে হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের এখনো বহুদূর পথ পাড়ি দেওয়ার বাকিI মোটামুটিভাবে বাংলাদেশের ফার্মাসিস্টরা ৬টি মূলধারায় তাদের অবদান রেখে চলছেI এগুলো হলো— ওষুধ প্রস্তুতকরণ, ওষুধ বিপণন, হাসপাতাল ফার্মেসি, কমিউনিটি ফার্মেসি, ওষুধবিষয়ক গবেষণা এবং শিক্ষকতা I
ব্যক্তিপর্যায়ে কিছু শিক্ষকের স্বতন্ত্র গবেষণা ছাড়া সামগ্রিকভাবে ওষুধশিল্পের অগ্রগতির জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খুব একটা গবেষণা হয় না বললেই চলে। অথচ এটা শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, তা এই শিল্পের জন্য অপরিহার্যও বটে I তাই এই বিষয়টির প্রতি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং একাডেমিক ফার্মাসিস্টদের একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, যা বাংলাদেশের ওষুধশিল্পকে দিতে পারে এক ভিন্নমাত্রা I
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।