ডেস্ক রিপোর্ট
মুসলিম জনপদগুলোতে অমুসলিম শক্তিগুলোর আগ্রাসন ও গণহত্যা মুসলমানদের দুনিয়ার বুক থেকে মুছে ফেলার সমন্বিত ষড়যন্ত্রের অংশ। তাই ফিলিস্তিন-আরাকান-কাশ্মিরের মুসলমানদের উপর নিপীড়নকে একসূত্রে গাঁথা বিবেচনা করে শত্রুদের বিরুদ্ধে সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে এক যোগে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
এ সময় কাশ্মিরে হামলাকে কেন্দ্র করে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধের পায়তারার প্রতিবাদ জানানো হয়।
সমাবেশে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা এসময় ‘ফ্রি ফ্রি, কাশ্মীর’, ‘ফ্রি ফ্রি, প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রি ফ্রি, আরাকান’, ‘বিশ্ববাসী এক হও, গাজা দখল রুখে দাও’, ‘দুনিয়ার মুসলিম এক হও, লড়াই করো’, ‘ইসরাইলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মিয়ানমারের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মুসলমান বসবাস করে। অথচ ভারত ফিলিস্তিনের মুসলমানদের গণহত্যায় ইসরাইলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। এরপর তারা মুসলমানদের ধর্মীয় সহায় সম্পত্তি কেড়ে নিতে ওয়াকফ বিলের নামে ষড়যন্ত্র করেছে। এরমধ্য দিয়ে গোটা ভারতে মুসলমানেরা ক্ষোভে ফুঁসছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার মুসলমানদের ক্ষোভ প্রশমন করতে ব্যর্থ হয়ে কাশ্মীরের মতো কঠোর সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ২৭ জন পর্যটক হত্যা করে মুসলমানদের দোষারোপ করছে।
তিনি বলেন, ভারত সরকার পেহেলগামের ঘটনাকে পুঁজি করে মুসলমানদের আক্রমণের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ফলে কাশ্মীরসহ সারা ভারতে মুসলমানেরা আজ গেরুয়া সন্ত্রাসীদের আক্রমণেরর শিকার হচ্ছে। এ সন্ত্রাস অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং হিন্দুত্ববাদীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ভারতে মুসলমানদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশ্ব দরবারে জনমত গড়ে তুলতে হবে।
এসময় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারী কমিশনের প্রতিবেদনে ইসলাম বিরোধী সুপারিশের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভারতের প্রকাশ্য দালাল পালালেও বর্ণচোরা দালালরা সক্রিয়। তারা এনজিও দালালদের সঙ্গে মিলে মোদী সরকারের মতো বাংলাদেশে মুসলমানদেরকে ইসলামী আইনের বদলে অভিন্ন পারিবারিক আইন চাপিয়ে দিতে চায়। এ অবস্থায় অবিলম্বে নারী কমিশন ভেঙে দিতে হবে। আর যে সকল ভারতীয় দালাল ও এনজিওর দালালরা সংস্কার কমিশনের নামে ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদের কমিশন থেকে প্রত্যাহার করে গ্রেফতার করতে হবে।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব বলেন, বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য জানমালের নিরাপত্তা ও ইজ্জত রক্ষার জন্য আমাদের লড়াই চলছে এবং চলবে।
তিনি বলেন, ভারতে মুসলমানদের উপর হিন্দুত্ববাদীরা গণহত্যা ও উচ্ছেদ চালাচ্ছে। আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই ভারতের মুসলমানদের মুছে দেওয়ার পরিকল্পনা কখনোই সফল হবে না। কাশ্মিরে আর কোনো হত্যাযজ্ঞ সহ্য করা যায় না। কাশ্মিরের জনগণের স্বাধীনতার দাবি মানতে হবে। ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। এছাড়া আরাকান মুসলমানদের জন্য নিরাপদ করে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ফিরিয়ে নিতে হবে। তাদের ওপর আর কোনো গণহত্যা বরদাস্ত করা হবে না।
সাইয়েদ কুতুব বলেন, ফিলিস্তিন যতদিন না স্বাধীন হবে আমাদের ভাইয়েদের লড়াই ততদিন পর্যন্ত চলতেই থাকবে। এ লড়াই শুধু ফিলিস্তিনের নয়, এ লড়াই প্রতিটি মুক্তিকামী মানুষের ও প্রতিটি মুসলমানের।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের এই যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, বাংলাদেশ মুসলমানদের। মুসলমানরা লড়াই করে ফ্যাসিবাদ উৎখাত করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দেশ পরিচালনার সুযোগ দিয়েছে। তারা এই সুযোগের অপব্যবহার করে একটি নারী কমিশন করেছে যা ইসলাম বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান ও আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান; বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সহকারী সদস্য সচিব এসএম রাফসান যানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোঃ আরিফুল ইসলাম, সরকারি মাদরাসা-ই- আলিয়া শাখার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল ও সদস্য সচিব জিনাত হোসাইন প্রমুখ। ডেস্ক জেবি
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।